বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি, সৈকতে ৬ লাশ

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সিগাল পয়েন্ট থেকে ছয় ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার ভোরে এসব লাশ জোয়ারে ভেসে সৈকত ভেড়ে। পরে সকাল সাতটার দিকে ভাসমান একটি ট্রলারের পাশ থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে পুলিশ। এখনো অন্তত সাতজন নিখোঁজ।

উদ্ধার করা ব্যক্তিরা হলেন ভোলার চরফ্যাশনের মো. জুয়েল (২২) ও মনির আহমদ (৫০)। তাঁদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হতাহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিরা সবাই জেলে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. খায়রুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সৈকতে লাশ ভেসে আসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে জানান। এরপর পুলিশ সৈকতের সিগাল পয়েন্ট থেকে প্রথমে চার ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে। সকাল সাতটার দিকে সৈকতে কাছে আটকে পড়া একটি মাছ ধরার ট্রলারের পাশ থেকে আরও দুই ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় ট্রলারের আশপাশ থেকে ভাসমান অবস্থায় দুই ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, এসব লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত দুই জেলেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ পরিদর্শক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, পাঁচ দিন আগে ভোলার চরফ্যাশন থেকে একটি ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে নামেন স্থানীয় ১৫ জন জেলে। ট্রলারটি কক্সবাজার উপকূলে মাছ ধরতে এসে ঝোড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে। একসময় ট্রলারটির ইঞ্জিনও বিকল হয়ে যায়। প্রাণ রক্ষার্থে জেলেরা সাগরে ঝাঁপ দেন। কিন্তু সাগর উত্তাল থাকায় উপকূলে আসতে পারেননি তাঁরা। আজ ভোরে ট্রলারটি জোয়ারের ধাক্কায় ভেসে কক্সবাজার সৈকতের কাছে চলে আসে।

চার দিন ধরেই উত্তাল বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূল। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে চার ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলে আঘাত হানছে। কক্সবাজার উপকূলে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত বলবৎ আছে।

কক্সবাজার জেলা বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বলেন, গত ২০ মে থেকে টানা ৬৫ দিনের জন্য বঙ্গোপসাগরে সরকারের ‘মাছ ধরা বন্ধ’ কর্মসূচি চলছে। এ কারণে জেলার টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও চকরিয়া উপজেলার প্রায় ছয় হাজার ট্রলার বঙ্গোপসাগরে নেই। ট্রলারগুলো স্থানীয় বিভিন্ন ঘাটে নোঙর করা আছে। সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে উত্তাল ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মাছ ধরতে গিয়ে ভোলার এই ট্রলার দুর্ঘটনায় পড়ে এবং হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। কয়েকজন জেলে নিখোঁজ।

পুলিশ জানায়, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে অনুসন্ধান চলছে। মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নিহত ব্যক্তিরা সবাই চরফ্যাশনের বাসিন্দা।