কক্সবাজারে যত ভয় বেড়িবাঁধের ৫০০ মিটারে

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ৫০০ মিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে এই অংশটি ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হতে পারে। গত সোমবার বিকেলে মগনামা ইউনিয়নের শরৎঘোনার উত্তর পাড়া নাশি এলাকায়।  প্রথম আলো
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ৫০০ মিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে এই অংশটি ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হতে পারে। গত সোমবার বিকেলে মগনামা ইউনিয়নের শরৎঘোনার উত্তর পাড়া নাশি এলাকায়। প্রথম আলো

কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ রয়েছে সাড়ে আট কিলোমিটার। এর মধ্যে পাঁচ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ব্লক দিয়ে মেরামত করা হয়েছে। তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অবস্থাও মোটামুটি ভালো। কিন্তু বাকি ৫০০ মিটার বেড়িবাঁধ নিয়ে যত ভয় স্থানীয় বাসিন্দাদের। যেকোনো মুহূর্তে সাগরে বিলীন হয়ে যেতে পারে বাঁধের ওই অংশ। সাগরে জোয়ারের তীব্রতায় ধীরে ধীরে ধসে পড়ছে বাঁধ।

স্থানীয় মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ বলেন, শরৎঘোনা এলাকার ৫০০ মিটার বেড়িবাঁধ খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষার আগে বেড়িবাঁধের বিষয় নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা ও বাঁধ মেরামতে নিয়োজিত ঠিকাদারের সঙ্গে অনেকবার তর্কাতর্কি হয়েছে। 

তারপরও তাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ অংশটি মেরামত করেননি। এই অংশটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে যাবে। তখন পুরো ইউনিয়নের অন্তত ১০ হাজার বসতঘর ও শতাধিক চিংড়িঘের প্লাবিত হবে।

গত সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, মগনামা ইউনিয়নটি কুতুবদিয়া সাগর উপকূলবর্তী। সাগরের পানি ঠেকাতে ইউনিয়নের চারপাশে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। মগনামা লঞ্চঘাট থেকে উত্তর দিকে সাড়ে তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অবস্থা এবড়োখেবড়ো। 

উত্তর পাড়া নাশি এলাকায় ৫০ ফুট প্রস্থের বেড়িবাঁধ তিন ফুট হয়ে গেছে। এভাবে অন্তত ৫০০ মিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। 

এই বেড়িবাঁধের পাশে চিংড়িঘের করেন কলিমউল্লাহ। তিনি বলেন, গত ১০ বছর বেড়িবাঁধ নিয়ে কষ্ট পাচ্ছে এলাকার মানুষ। প্রতি বর্ষায় বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে লোকালয়ের সঙ্গে চিংড়িঘের একাকার হয়ে যায়। চিংড়িচাষিরা প্রতিবছরই লোকসান গুণছেন। এবার পুরো ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ঠিক হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ রয়ে গেছে মাত্র ৫০০ মিটার বেড়িবাঁধ। কয়েক দিনের মধ্যে এই বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশটি জোয়ারের তীব্রতায় ভেঙে পড়বে।

স্থানীয় বাসিন্দা নেছার আহমদ (৩০) বলেন, গত রোববার থেকে জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে ঢুকছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। 

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবউল করিম বলেন, সোমবার দুপুরে নিজেই বেড়িবাঁধের শরৎঘোনা এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ অংশটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। এই অংশটি নিয়ে মানুষ খুব কষ্টে আছে। বিষয়টি পাউবো ও জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ করছে উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত জুন মাসে তাদের কার্যাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ঠিকাদারকে কঠোরভাবে বলা আছে, বেড়িবাঁধ ভাঙলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার। এরপরও আমি সরেজমিনে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’