কুড়িগ্রামে নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগ, পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

কুড়িগ্রামে কনস্টেবল পদে নিয়োগ–বাণিজ্যের সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ (এএসপি) ছয়জনের জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের কাছ থেকে ঘুষের ৩৩ লাখ টাকা উদ্ধার করে ফেরত দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, এবার কুড়িগ্রামে ৩৩ জন কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোনো ঘুষ ও তদবির ছাড়া মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে তাঁরা চাকরি পেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান কনস্টেবল পদে নিয়োগ পাওয়া ৩৩ জনের নামের তালিকা সাংবাদিকদের দেন। তিনি বলেন, এঁদের কারও বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে নিয়োগ বাতিল করা হবে। এর সঙ্গে পুলিশের কেউ জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসপি জানান, কনস্টেবল পদে নিয়োগ–বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এএসপি রিপন কুমার মোদককে তাৎক্ষণিকভাবে খাগড়াছড়ি ও উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তালেবকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে। এসপির কার্যালয়ের হিসাবরক্ষক আবদুল মান্নান ও উচ্চমান সহকারী ছকমল এবং রংপুর ডিএসবির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রুহুল আমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্পিডবোটের চালক সাইদুর রহমান ও রেশন গুদামের ওজনদার আনিছুর রহমানকে প্রত্যাহার করে পুলিশের উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘুষের ৩৩ লাখ টাকা উদ্ধার করে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের ফেরত দেওয়া হয়েছে।

গত ২৯ জুন কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনস মাঠে কনস্টেবল নিয়োগ–প্রক্রিয়া শুরু হয়। শারীরিক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচিতদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও মিষ্টিমুখ করান এসপি।

এর আগে এসপি মহিবুল ইসলাম খান কুড়িগ্রামে যোগদানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি পুলিশের নিয়োগ নিয়ে কাউকে কোনো রকম প্রতারণার ফাঁদে পা না দিতে সতর্ক করেন। এ ছাড়া পুলিশের কোনো সদস্য আর্থিক লেনদেনে জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। জেলা ও উপজেলা শহর এবং ইউনিয়নে মাইকিং ও পোস্টারিংও করা হয়। তা সত্ত্বেও একটি চক্র পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে নিয়োগের জন্য অবৈধভাবে অর্থ লেনদেন করে। গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে তাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণ পাওয়া যায়। তাঁদের মধ্যে হিসাবরক্ষক আবদুল মান্নান ও উচ্চমান সহকারী ছকমলের কাছ থেকে ২৩ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। ডিএসবির এএসআই রুহুলকে ১০ লাখ টাকাসহ আটক করা হয়।

জানতে চাইলে জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এ কে এম সামিউল হক বলেন, এবার পুলিশের নিয়োগ স্বচ্ছভাবে হয়েছে। এর আগে কখনো এমন নিয়োগ দেখা যায়নি।