ডিআইজি মিজানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি পেল দুদক

পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান।প্রথম আলোর ফাইল ছবি
পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান।প্রথম আলোর ফাইল ছবি

পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) অনুমতি দিয়েছেন আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ ইমরুল কায়েস আজ বুধবার এই আদেশ দেন।

আদালত সূত্র বলছে, ৪০ লাখ টাকা ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ডিআইজি মিজানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি চেয়ে দুদকের পক্ষ থেকে আজ আদালতে আবেদন করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত আগামী ১৫ জুলাই ডিআইজি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়টি অনুসন্ধান করছে দুদক।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ২ জুলাই থেকে কারাগারে আছেন ডিআইজি মিজান।

কারাগারে যাওয়ার দুই দিনের মাথায় ৪ জুলাই আত্মসমর্পণ করলে মিজানের ভাগনে এস আই মাহমুদুল হাসানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

গত ২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় মিজানুর রহমান, তাঁর স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়।

মিজানুর ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাঁকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। গত ২৫ জুন তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

ডিআইজি মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করে দুদক । তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন বলে অভিযোগ করেন মিজানুর রহমান। মাস ছয়েক ধরে দুজনের মধ্যে এ নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথমে ২৫ লাখ ও পরে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছেন মিজানুর। কিন্তু ২ জুন খন্দকার এনামুল বাছির মিজানুরকে জানান, তিনি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তবে দুদক চেয়ারম্যান ও কমিশনারের চাপে তাঁকে অব্যাহতি দিতে পারেননি।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিজানুর টাকাপয়সা লেনদেনের সব কথা ফাঁস করে দেন। প্রমাণ হিসেবে হাজির করেন এনামুল বাছিরের সঙ্গে কথোপকথনের একাধিক অডিও রেকর্ড। এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রচার করে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেল।