অডিওর কণ্ঠ তাঁর নয়, দাবি দুদক পরিচালক বাছিরের

এনামুল বাছির
এনামুল বাছির

পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের সরবরাহ করা অডিও রেকর্ডে তাঁর কণ্ঠ নেই বলে দাবি করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত হওয়া পরিচালক এনামুল বাছির। দুদকে তলবে উপস্থিত না হয়ে সেখানে পাঠানো চিঠিতে এ দাবি করেন তিনি।

আজ বুধবার দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হওয়ার জন্য তলব করা হয়েছিল তাঁকে। দুদক সূত্র জানায়, তিনি দুদকে হাজির হননি। তবে তাঁর শ্যালিকা পরিচয়ে একজন একটি চিঠি দিয়ে যান দুদকে। কিছুক্ষণ পর তাঁর আইনজীবীও আসেন। তিনিও একই চিঠি জমা দেন।

সূত্র জানায়, চিঠিতে এনামুল বাছির কয়েকটি লাইন লিখেছেন। সেখানে তিনি বলেন, অডিও রেকর্ডের কণ্ঠ তাঁর নয়। ডিআইজি মিজানের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ নেই। তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তিনি তার সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন। এই বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্যও নেই।

দুদক সূত্র বলছে, এনামুল বাছিরের এই চিঠি পাওয়ার পর তাঁকে আর জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না। এই বক্তব্যকেই তাঁর বক্তব্য হিসেবে গণ্য করে অনুসন্ধান কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে।

এদিকে আজ বুধবার ডিআইজি মিজানের গাড়িচালক এনামুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের অনুসন্ধান দল। সূত্র জানিয়েছে, এনামুল কোনো বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেননি। তাঁকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগটি অনুসন্ধান করছে পরিচালক ফানাফিল্ল্যাহর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল। দলের অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনামুল বাছিরকে এর আগে আরেকবার তলব করা হলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি হাজির হননি।

ডিআইজি মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের দায়িত্বে ছিলেন এনামুল বাছির। তাঁকে ঘুষ দেওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় একটি অডিও রেকর্ডের সূত্র ধরে। মিজানও প্রকাশ্যে স্বীকার করেন, তিনি এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন। এটি প্রকাশ হওয়ার পর এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মিজানের অনুসন্ধানের দায়িত্ব চলে যায় দুদকের আরেক পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদের হাতে। তিন কোটি সাত লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং তিন কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধ সম্পদের অভিযোগে স্ত্রী, ভাই ও ভাগ্নেসহ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গত ২৪ জুন মামলা করেন তিনি। মিজান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসান ও ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান।

এদিকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে অডিও রেকর্ডগুলোর ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারে (এনটিএমসি) পাঠায় দুদক। সেখান থেকেও প্রতিবেদন দুদকে চলে এসেছে বলে দুদক সূত্র জানায়। রেকর্ডের বক্তব্যগুলো কণ্ঠ নকল করে বানানো বলে এনামুল বাছির দাবি করলেও সূত্রমতে, এনটিএমসির পরীক্ষায় তা এনামুল বাছিরের বলে প্রমাণ হয়েছে।