ইউনেসকো কিছুটা লজ্জাও পেয়েছে: তৌফিক-ই-ইলাহী

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। ফাইল ছবি
তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। ফাইল ছবি

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির কোনো আপত্তি নেই। কারণ, বাংলাদেশ বোঝাতে সক্ষম হয়েছে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। ইউনেসকো কিছুটা লজ্জাও পেয়েছে।

গতকাল বুধবার রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এ কথা বলেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আহমেদ কায়কাউস, পানিসচিব কবির বিন আনোয়ার প্রমুখ।

ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির এবারের সভা শুরু হয় আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে গত ৩০ জুন, শেষ হবে ১০ জুলাই। ওই সভায় সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় তোলা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ওই সভার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ইউনেসকোর কাছে বাংলাদেশ তিনটি কাজ করার অঙ্গীকার করেছে। এর মধ্যে দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষা (এসইএ) শুরুর জন্য সরকার ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করেছে। আগামী আড়াই বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউনেসকোর একটি প্রতিনিধিদলকে সুন্দরবন দেখতে আসতে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ ছাড়া সুন্দরবন নিয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে সরকার।

জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘ইউনেসকো সুন্দরবন নিয়ে যে কমেন্ট করেছে, সেটি ছিল একধরনের স্টুপিড কমেন্ট। আমার মনে হয়, আমাদের উপস্থাপিত প্রতিবেদন দেখার পর তারা কিছুটা লজ্জাও পেয়েছে।’

ইউনেসকোকে তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তাকারী আইইউসিএনের কাছে সুন্দরবনের বিষয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য ছিল না—এমন দাবি করে তৌফিক–ই–ইলাহী বলেন, ‘আগে ইউনেসকো রামপালের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। এবার তারা পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। আমরা তাদের মানচিত্রে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অবস্থান দেখিয়েছি, পায়রা কোথায় আর সুন্দরবন কোথায়। তাদের আমরা বলেছি, আর একটু দূরে গেলে তো ঢাকাই চলে যেতে পারতে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আহমেদ কায়কাউস সুন্দরবনের আয়তন বেড়েছে দাবি করে বলেন, ১৯৯৬ সালে সুন্দরবনের আয়তন ছিল ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৬১৭ হেক্টর। ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী তা বেড়ে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫৭ হেক্টর। তিনি আরও বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পানি থেকে দূষণ হবে এমনটি দাবি করা হয়। অথচ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পরিষ্কার পানির প্রয়োজন হয়। আর এ কেন্দ্রের পানি রিসাইকেল করে ব্যবহার করা হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পানি এতটাই বিশুদ্ধ হবে যে তা পান করা যাবে।