জয়পুরহাটে সড়কের ধীরগতির কাজের প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘট

জয়পুরহাট
জয়পুরহাট

জয়পুরহাটে বিভিন্ন সড়কের কাজ ধীরগতিতে করার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী পরিবহন ধর্মঘট চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো সড়ক প্রশস্তকরণ এবং উন্নতিকরণের কাজ ধীরগতিতে করায় যৌথভাবে ধর্মঘট পালন করছে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মিনিবাস মালিক সমিতি, ট্রাক মালিক এবং ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন। জেলাজুড়ে কোনো যানবাহন চলাচল না করায় সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে।

আজ সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে। ধর্মঘট চলাকালে জয়পুরহাট থেকে ঢাকাগামী কোনো বাস এবং আন্তজেলা বাস-ট্রাক চলাচল করবে না।

জয়পুরহাট-আক্কেলপুর এবং ক্ষেতলাল-আক্কেলপুর ও জয়পুরহাট-মোকামতলা আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণের কাজ করতে গিয়ে সড়কের পিচঢালাই তুলে ফেলা হয়। দীর্ঘদিনেও ওই কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সড়কে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তে জমে থাকা কাদা–পানিতে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

ওই সব সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন জয়পুরহাট জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিক সমিতি। তারা গত ২৪ জুন জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগকে দ্রুত কাজ শেষ করার আহ্বান জানায়। কাজের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আজ জেলাজুড়ে শ্রমিক ধর্মঘট করে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় তারা।

শ্রমিক–মালিকেরা দাবি করেন, দীর্ঘদিনেও সড়কের ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়নি। আগামী দুই মাসে বাকি কাজ শেষ করা সম্ভব না।

জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উত্তরাঞ্চলের চারটি সড়কের উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণের জন্য ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল ২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। জয়পুরহাট শহরের বাটার মোড় থেকে আক্কেলপুর বাজার পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে ২৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকার কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধ্রুব কনস্ট্রাকশন। ২০১৮ সালের ২৭ মে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চলতি বছরের ২৬ আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা।

একই সময়ে ক্ষেতলাল থেকে আক্কেলপুর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কের কাজে দুটি প্যাকেজের মধ্যে ১০ কিলোমিটারে ১৯ কোটি ৩১ লাখ টাকার কাজ পায় রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেডসহ আরও দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ কাজও চলতি বছরের ১৯ আগস্টের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। বাকি আট কিলোমিটারে ১৮ কোটি ১৫ লাখ টাকার কাজ পায় এম এম বিল্ডার্স, তাহের ব্রাদার্স এবং রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমিটেড। গত বছরের ২৭ জুন কার্যাদেশ পায় তারা। কাজ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর। কাজের গতি সন্তোষজনক না হওয়ায় শ্রমিক-মালিকেরা আজ ধর্মঘট ডেকেছেন।

জয়পুরহাট জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, জয়পুরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্তব্যে অবহেলার সুযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে ইচ্ছামাফিক ধীরগতিতে। বাস-ট্রাক চালাতে গিয়ে ছোট–বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন শ্রমিকেরা।

সওজের বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর সিদ্দিক বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, দুই মাসের মধ্যে রাস্তা যানবাহন চলাচলের উপযোগী হবে। বালু, পাথর ফেলার পর বৃষ্টির কারণে রোলার চালাতে না পারায় বৃষ্টিতে কিছু জায়গায় গর্ত ও কাদা হয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।