লক্ষ্যে পৌঁছাতে বড় লাফ দিতে যাইনি: প্রধানমন্ত্রী

গণভবনে কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস
গণভবনে কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ ধাপে ধাপে এগিয়ে এ পর্যন্ত এসেছে। একটি লক্ষ্য স্থির করে নিয়মের মধ্য দিয়ে ধাপে ধাপে যে সবকিছুই অর্জন করা সম্ভব, সেটা আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে। তিনি বলেন, ‘লক্ষ্যে পৌঁছাতে বড় লাফ দিতে যাইনি।’

শেখ হাসিনা আজ শুক্রবার বিকেলে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এটাই চাইব, মানুষের জীবনমান উন্নত হবে, এই বাংলাদেশের একটি মানুষও দরিদ্র, গৃহহারা থাকবে না, বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাবে না এবং সার্বিকভাবে এই দেশ হবে একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ।’

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের জনগণকে অবহেলা করে দেশ পরিচালনা করে না, বরং মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছে এবং সুখ–দুঃখে সব সময় জনগণের পাশে থেকেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষকে অবহেলা করে কখনো দেশ পরিচালনা করিনি। মানুষের সুখ, দুঃখের সাথি হয়ে বিপদে তাঁদের পাশে দাঁড়ানো আর মানুষের কল্যাণে এবং উন্নয়নে কাজ করেছি। এই নীতি নিয়েই আমরা কাজ করি বলেই আজকে দেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খুব বড় বড় দেশের মতো দৃশ্যত উন্নয়ন হয়তো করতে পারব না, কিন্তু আমাদের প্রতিটি মানুষই তাঁর জীবনটাকে অর্থবহ করবে, দারিদ্র্যের হাত থেকে মুক্তি পাবে, সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে, তাঁদের জীবনের লক্ষ্যগুলো অন্তত পূরণ হবে। সেইভাবে আমাদের দেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে চাই।’

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ আবার বিশ্বে তাঁর হৃতগৌরব ফিরে পেয়েছে, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ধাপে ধাপে এগিয়ে এ পর্যন্ত এসেছি। একটি লক্ষ্য স্থির করে নিয়মের মধ্য দিয়ে ধাপে ধাপে যে সবকিছুই অর্জন করা সম্ভব, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ১০ বছরে আমরা উন্নয়নের গতিধারা ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে এসেছি বলেই হোঁচট খাইনি বা পিছিয়ে যাইনি বা হঠাৎ করে আমরা বড় জাম্প (লাফ) করতে যাইনি। যে কারণে টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়েছে বাংলাদেশ।’

শেখ হাসিনা দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত–সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে চাই। সে পরিকল্পনাও আমাদের রয়েছে।’ তিনি এ সময় দলের উপদেষ্টাদের দলের ‘থিংক ট্যাংক’ আখ্যায়িত করে তাঁদের আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।

এ সময় ৯১-এর ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতিচারণা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সে সময় সরকারের কোনোরূপ পদক্ষেপ গ্রহণের আগেই বিরোধী দলে থাকা আওয়ামী লীগ দুর্গত জনগণের পাশে এসে দাঁড়ায়। তখনকার সরকারপ্রধান হিসেবে খালেদা জিয়ার ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।


দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতির কথা শেখ হাসিনা সংসদে তুলে ধরলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ে যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল, তত মানুষ মারা যায় নাই।’ শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেন, ‘কত মানুষ মারা গেলে আপনার তত মানুষ হবে।’