লাউয়াছড়ায় পর্যটক সেজে 'গবেষণায়' দুই বিদেশি

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। ফাইল ছবি
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। ফাইল ছবি

সরকারি অনুমতি না নিয়ে পর্যটকবেশে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ করে গবেষণা করার অভিযোগ উঠেছে দুই বিদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার পর শ্রীমঙ্গলে মানববন্ধন হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়া উপেক্ষা করে গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় লাউয়াছড়া উদ্যানের প্রবেশপথে ‘সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন, সিলেট’–এর ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি দেশীয় গবেষক শাহরিয়ার সিজারের সঙ্গে দুজন মার্কিন গবেষক পর্যটক হিসেবে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রবেশ করেন। তাঁরা অবৈধভাবে উদ্যান থেকে নানা জাতের সাপের ডিম সংগ্রহ করেন। অথচ গবেষণার কাজে আসতে হলে বিদেশিদের প্রয়োজনীয় সরকারি অনুমতি নিতে হয়। তাঁরা সরকারি অনুমতির তোয়াক্কা না করেই জাতীয় উদ্যানে ঘুরে এ বনের জীববৈচিত্র্য সংগ্রহ করেছেন। তাঁদের এ ধরনের কাজে লাউয়াছড়া বনে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। শাহরিয়ার সিজারসহ পর্যটকবেশে গবেষকদের এ ধরনের কাজের তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট বিভাগীয় সম্পাদক আবদুল করিমের নেতৃত্বে স্থানীয় জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি, পরিবেশ সাংবাদিক ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা মানববন্ধনে অংশ নেন। এতে বক্তব্য দেন পরিবেশ সংগঠক নিয়ামুল ইসলাম খান, বাপা সিলেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামির মাহমুদ চৌধুরী, শামছুল হক, পরিবেশ সাংবাদিক ফোরাম মৌলভীবাজারের সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোহাইমিন, ব্যারিস্টার গোলাম সোবহান চৌধুরী, বাপা হবিগঞ্জ কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, বাপা মৌলভীবাজারের সমন্বয়কারী আ ছ ম ছালেহ সোহেল, আবদুল আহাদ, কমলগঞ্জ জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি মঞ্জুর আহমদ আজাদ প্রমুখ।

জানতে চাইলে সাপ গবেষক শাহরিয়ার সিজার মুঠোফোনে বলেন, তাঁর সঙ্গে দুই বিদেশি পর্যটক হিসেবে এসেছিলেন। তাঁরা কোনো গবেষণা করেননি। বনের জীববৈচিত্র্য পর্যবেক্ষণ করে গেছেন। তিনি সরকারি অনুমতি ছাড়া গবেষণা করলে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সেটি দেখবে। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়।

বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, উদ্যানের ভেতরে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে গবেষণা করতে হলে অনুমতি নিতে হয়। এ ধরনের কেউ উদ্যানে ঢুকে গবেষণা করেছেন কি না, তা তাঁর জানা নেই। তবে অভিযোগটি তিনি খতিয়ে দেখবেন।