ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন, প্লাবিত ২ গ্রাম

কমলগঞ্জের রামপাশা গ্রামে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙন এলাকা দিয়ে পানি ঢুকছে। ছবি: প্রথম আলো
কমলগঞ্জের রামপাশা গ্রামে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙন এলাকা দিয়ে পানি ঢুকছে। ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের ধলাই নদের পানি বেড়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। এ কারণে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটায় জেলার কমলগঞ্জ পৌরসভার রামপাশা এলাকায় ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুটি গ্রামের শতাধিক পরিবারের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

উজানের ঢলের পানি নেমে এসে গতকাল রাত নয়টা থেকে ধলাই নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এ সময় পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ক্রমে পানি বেড়ে রাত দুইটায় রামপাশা গ্রামের শ্যামল পাল চৌধুরীর বাড়িসংলগ্ন এলাকার প্রায় ১০০ ফুট পরিমাণ প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে রামপাশা ও কুমড়াকাঁপন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

কমলগঞ্জ পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, এ এলাকার প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে চারটি পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। আজ শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

কমলগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফখরুল ইসলাম বলেন, গভীর রাতে বাঁধ ভেঙে ঢলের পানি ঢুকে এ প্লাবনের সৃষ্টি করেছে। প্লাবনের পানিতে রামপাশা ও কুমড়াকাঁপন গ্রামের ব্যাপক এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। আজ সকাল থেকে পানি গিয়ে ছাইয়াখালী হাওরে জমা হতে শুরু করে। দুই কাউন্সিল আরও বলেন, এ এলাকার প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ, তা আগে থেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল।

কমলগঞ্জের রামপাশা গ্রামে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে পানিতে নিমজ্জিত একটি বাড়ি। ছবি: প্রথম আলো
কমলগঞ্জের রামপাশা গ্রামে ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে পানিতে নিমজ্জিত একটি বাড়ি। ছবি: প্রথম আলো

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দী পরিবারগুলোর মধ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন রামপাশা, কুমড়াকাঁপন গ্রামসহ পুরো কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদের ওপর সার্বিক নজরদারি করছে।

ঘটনাস্থলে থাকা পাউবোর কর্মকর্তা খালিদ বিন ওয়ালিদ বলেন, এ এলাকার প্রতিরক্ষা বাঁধসহ পুরো ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধে পাথরের ব্লক স্থাপনে একটি প্রস্তাব দুই মাস আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ প্রস্তাব পাস হলে প্রতিরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হবে। আপাতত গতকাল রাতে ভেঙে যাওয়া অংশে মেরামতকাজ করার জন্য একজন ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। পানি কমলে কাজ শুরু হবে।

পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, ঘটনাস্থলে তাঁদের দুজন কর্মকর্তা নজরদারি করছেন। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরক্ষা বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী আরও বলেন, উজানে তেমন বৃষ্টি না হলে আশঙ্কার কিছু নেই।