গাইবান্ধায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী

দফায় দফায় বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার চারটি উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

ইউনিয়নগুলো হচ্ছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, কাপাসিয়া, হরিপুর ও তারাপুর; ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া, ফুলছড়ি, এরেন্ডাবাড়ি, ফজলুপুর ও গজারিয়া, সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা সদর ও হলদিয়া এবং সদর উপজেলার কামারজানি ও মোল্লারচর। এ ছাড়া বিভিন্ন পাটের জমি ও রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে।

আজ শনিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার, তিস্তা নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া যমুনা ও করতোয়া নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

অপরদিকে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর উড়িয়া ও কাবিলপুর, গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারী ও গলনা, ফুলছড়ি ইউনিয়নের দেলুয়াবাড়ী, ফজলুপুর ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারি, উজালডাঙ্গা ও বাজে তেলকুপি, এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের হরিচন্ডি, জিগাবাড়ী ও সন্ন্যাসীর চর এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ও কাপাসিয়া, শ্রীপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে এসব এলাকার ১২০টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ বলেন, ফুলছড়ি উপজেলার দেলুয়াবাড়ি, জামিরা, গজারিয়া ইউনিয়নের গলনা, ফজলুপুর এখন বন্যা কবলিত। এসব এলাকায় নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন তৎপর আছে।

আজ দুপুরে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, নদীর পানি যে হারে বাড়ছে তাতে ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাঁধের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

গাইবান্ধার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রোকসানা বেগম বলেন, সাঘাটা, ফুলছড়ি, গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২০০ মেট্রিক টন চাল এবং দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ থেকে এগুলো বিতরণ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া পানিবন্দী মানুষের জন্য আশ্রয়ণ কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী বলেন, বন্যার পানি ওঠায় জেলার চারটি উপজেলায় ৯৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ৬টি, সুন্দরগঞ্জে ২০টি, সাঘাটায় ১৭টি ও ফুলছড়িতে ৫২টি।