১৭ শতাংশ ভোটই বাতিল

নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন পদে পড়া ভোটের ৫ দশমিক ১ থেকে ১৭ দশমিক ৬৮ শতাংশই বাতিল হয়েছে। ব্যালটে মারা সিলের অস্পষ্টতা, একাধিক প্রতীকে সিল দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে এসব ভোট বাতিল হয়।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এই উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হয়। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৯২ হাজার ৫১২। নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে এক লাখ ২০ হাজার ৬৯৬ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কিন্তু এর মধ্যে ২১ হাজার ৩৪৭টি ভোট বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে; যা ওই ভোটের ১৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে এক লাখ ২১ হাজার ১৬টি ভোট পড়ে। বাতিল হয় ১৪ হাজার ১৩৯টি। এটা ছিল প্রদত্ত মোট ভোটের ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ ছাড়া চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়ে এক লাখ ২০ হাজার ৬৯৪টি। বাতিল হয় ছয় হাজার ৫৩টি; যা প্রদত্ত ভোটের ৫ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যালট অস্পষ্ট ছাপা হওয়ায় অনেকে কাঙ্ক্ষিত প্রতীক চিনতে পারেননি। বিভ্রান্ত ভোটারের বেশির ভাগই তখন প্রার্থীহীন প্রতীকে সিল দিয়েছেন। তা ছাড়া ব্যালটে মুদ্রিত প্রতীক দেখতে কাছাকাছি হওয়ায় কেউ কেউ একাধিক প্রতীকে সিল দিয়েছেন। অনেকে শুধু চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর প্রতীকে সিল মেরেছেন। ব্যালটে ছাপ দেওয়ার সময় কালি ফুরিয়ে যাওয়ায় অনেকে তিনটি ব্যালটের শেষেরটিতে আর সিল দিতে পারেননি।
এই উপজেলায় ১৯-দলীয় জোট-সমর্থিত জামায়াতের মাসুম মোস্তফা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন হচ্ছে জনগণের মত প্রকাশ ও নেতৃত্ব বাছাই-প্রক্রিয়া। কিন্তু প্রদত্ত ভোটের বড় একটি অংশ বাতিল হওয়ায় ওই সব ভোটারের মতামত কোনো কাজে আসেনি। এ জন্য ভোটারদের সচেতন করতে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বলেন, প্রতীক অস্পষ্ট হয়েছে। তা ছাড়া কয়েকটি প্রতীক দেখতে প্রায় একই রকম ছিল। ফলে অনেক ভোটার বিভ্রান্ত হয়েছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, দল-সমর্থিত প্রার্থীর বাইরে ব্যালটে প্রতীক না থাকলে কমসংখ্যক ভোট নষ্ট হতো বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনও ভোট নষ্ট হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই।’