সাত তলার বাথরুমের জানালা দিয়ে পালাতে গিয়ে...
সাত তলার টয়লেটের জানালা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল মো. শরীফ (১১) ও স্বপন (১৩) নামের দুই শিশু গৃহকর্মী। জানালার সঙ্গে নাইলনের রশি বেঁধে নামতে শুরু করে শরীফ। কিন্তু মাঝপথে হাত ফসকে নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয় সে। শরীফের এই পরিণতি দেখে ছয় তলায় থেমে যায় স্বপন। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ছয় তলার জানালা ধরে দাঁড়িয়ে থাকা স্বপনকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানা-পুলিশ ওই বাড়ির গৃহকর্তাসহ চারজনকে আটক করেছে।
পালানোর চেষ্টা করা গৃহকর্মী শরীফ ও স্বপনের অভিযোগ, গৃহকর্তা, তার স্ত্রী ও মেয়ে মিলে তাদের মারধর করতেন, বাইরে বের হতে দিতেন না। কয়েক দিন আগে বাসার সিঁড়ি দিয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করেছিল। তখন তাদের ধরে এনে মারধর করা হয়েছিল। তাই এবার তারা জানালা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে।
পুলিশ জানিয়েছে, গৃহকর্তা গোলাম কিবরিয়া (৭০) এক সময় কাস্টমস এর সহকারী কমিশনার ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগে। বাসায় কিবরিয়া ছাড়াও তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে থাকেন। আর গৃহকর্মী শরীফ ও স্বপনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। ঘটনার পর তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার মো. কাজল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ধানমন্ডি ১৪/এ সড়কের ১৩ তলা ভবনের ৭ম তলার একটি ফ্ল্যাটের টয়লেটের জানালা দিয়ে এই দুজন পালানোর চেষ্টা করেছিল। এর মধ্যে শরীফ নিচে পড়ে যায়। তাকে পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সকাল দশটার দিকে স্বপনকে ছয় তলার জানালা ধরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করেন তারা। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিচে পড়ে গিয়ে শরীফ মাথায় আঘাত পেয়েছে। তার বাম পা ঊরু বরাবর ভেঙে গেছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মাথায় আঘাত থাকায় শরীফ শঙ্কামুক্ত নয়।
ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী প্রথম আলোকে বলেন, স্বপন এই বাসায় দেড় বছর ধরে কাজ করে। আর শরীফ এসেছে দিন দশেক আগে। শিশু দুটি জানিয়েছে বাসার লোকজন বিভিন্ন সময়ে তাদের বেত দিয়ে মারধর করত। তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্নও পাওয়া গেছে। আহত শরীফের চিকিৎসার খরচ পুলিশ বহন করছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শিশু আইনে মামলা করা হবে।