রাঙামাটিতে পাহাড়ধসে দুই সড়কে যান চলাচল বন্ধ

রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের কাপ্তাইয়ের রাইখালি ইউনিয়নের কারিগর পাড়া এলাকায় পাহাড়ধসে নিহতদের উদ্ধারের পর রাঙ্গুনিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন সড়কে ধসে পড়া মাটি সরিয়ে নেন। পাহাড়ধসে এই সড়কে ৭ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। আজ শনিবার বেলা ৩টার দিকে তোলা। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা
রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের কাপ্তাইয়ের রাইখালি ইউনিয়নের কারিগর পাড়া এলাকায় পাহাড়ধসে নিহতদের উদ্ধারের পর রাঙ্গুনিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন সড়কে ধসে পড়া মাটি সরিয়ে নেন। পাহাড়ধসে এই সড়কে ৭ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। আজ শনিবার বেলা ৩টার দিকে তোলা। ছবি: সুপ্রিয় চাকমা

টানা বৃষ্টির ফলে রাঙামাটিতে পাহাড়ধসে দুই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কেও ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিতে রাঙামাটি-বড়ইছড়ি সড়কের ওয়াগ্গা উচ্চবিদ্যালয় এলাকায় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। এতে সড়কজুড়ে অন্তত ১০০ ফুট অংশে মাটি পড়ে। পরে ১২টার দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা সড়ক যান চলাচলের উপযোগী করে। পরে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মাটি সরানো যন্ত্র নিয়ে বেলা তিনটার দিকে সড়ক থেকে মাটি সরিয়ে ফেলে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কাপ্তাই-বান্দরবান সড়কের রাইখালী ইউনিয়নে মতিপাড়া এলাকার দুই স্থানে পাহাড়ধসে সড়কের ওপর পড়ে। মতিপাড়া থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে গারিগর পাড়ার দুই স্থানে পাহাড়ধস হয়। এতে দুই পথচারী নিহত হয়। একই সঙ্গে কর্ণফুলী নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় কাপ্তাই-বান্দরবান সড়কের চন্দ্রঘোনা লিচু বাগান ফেরিঘাট বন্ধ রাখা হয়। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলা, বান্দরবান ও কাপ্তাই উপজেলার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ে।

আজ ভোর সকাল ছয়টার দিকে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের মানিকছড়ি এলাকায় পাহাড়ধসে সড়কের একাংশে পড়ে। এ ছাড়া সড়কের অন্য অংশে বড় একটা সুড়ঙ্গ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে সকাল সাড়ে আটটার দিকে একই সড়কের যৌথখামার এলাকা পাহাড়ধসে সড়কের ওপর পড়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুপুরের দিকে পাহাড়ধসের মাটি সরানো হলে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তবে মানিকছড়ি এলাকায় সড়কের ভাঙনরোধ করতে না পারায় ভারী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের কলাবাগান এলাকায় পাহাড়ধসে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।
এ ছাড়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম ও আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কের অন্তত ১০ থেকে ১৫টি স্থানে পাহাড়ধস হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ধসে পড়া মাটি সরানো হয়েছে। তবে চরম ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

আজ দুপুরে কাপ্তাই-বান্দরবান সড়কে মতিপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বান্দরবান, বাঙ্গালহালিয়া ও রাজস্থলী উপজেলার শত শত মানুষ আটকে পড়েছে। পরে তারা পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যায়। কাপ্তাই উপজেলা দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী দীপন চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ঘাগড়া-বড়ইছড়ি ও কাপ্তাই-বান্দরবান সড়কে অন্তত ২০টি স্থানে পাহাড়ধস হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি স্থানে বড় আকারে পাহাড়ধসে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কর্ণফুলী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। আশা করি রাত নয়টার দিকে সব মাটি সরানো সম্ভব হবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবু মূছা প্রথম আলোকে বলেন, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে দুপুর পর্যন্ত রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ ছিল। ধসে পড়া মাটি সরানোয় হালকা যান চলাচল চালু করা হয়। তবে মানিকছড়ি এলাকায় সড়ক ধসে পড়ার কারণে আপাতত ভারী যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।