সমাজের ব্যাধি দূর করবে তরুণ নেতৃত্ব

দুর্নীতি, বৈষম্য, নারীর প্রতি সহিংসতা—বর্তমান সমাজের বিদ্যমান এসব ব্যাধি দূর করতে হবে তরুণদের। বাংলাদেশকে নিয়ে যত নেতিবাচক আলোচনা আছে তা থামিয়ে দেওয়া তরুণ নেতৃত্বের পক্ষেই সম্ভব। এর জন্য তরুণদের মধ্যে সহনশীলতা, অহিংসা এবং ভিন্ন মতামত গ্রহণের সামর্থ্য তৈরি করতে হবে।

আজ শনিবার ইয়ুথ লিডারশিপ সামিট ২০১৯-এর সমাপনী পর্বে বক্তারা তরুণদের এভাবেই উদ্দীপ্ত করেন। আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এবারের সম্মেলনে দেশি-বিদেশি ৩৭০ জন তরুণ পেশাজীবী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অংশ নেন।

ষষ্ঠবারের মতো এই সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইয়ুথ লিডারশিপ সেন্টার (বিওয়াইএলসি)। আয়োজনের সহযোগিতায় ছিল মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) এবং ইউকেএইড।

এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘স্ট্রেংথ ইনি ইউনিটি: শেপিং দ্য ফিউচার’। আয়োজকেরা বলেন, যে শক্তিগুলো তরুণদের বিভক্ত করে, তার চেয়ে যে মূল্যবোধগুলো তরুণদের একত্রিত করে, সেগুলো বেশি শক্তিশালী। এই মূল্যবোধকে সামনে রেখে এবারের সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সমাপনী পর্বে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশির বয়স ২৫ বছরের নিচে। আগামীর বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে তরুণদের মধ্যে নেতৃত্ব গুণ গড়ে তুলতে হবে। গণতন্ত্র, উদার ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ গড়তে তরুণদের নিজেদের সামর্থ্যের ওপর জোর দিতে হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নেদারল্যান্ডসের প্রিন্স কনস্টানটাইন ফন অরেঞ্জ। তিনি বলেন, সরকার তরুণদের স্বপ্নকে পূরণ করে দেবে না। সরকার স্বপ্ন পূরণের কাজটি সহজ বা কঠিন করতে পারে, কিন্তু দিন শেষে নিজেকেই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। তাই তরুণদের নিজেদের সর্বোচ্চটাই দিতে হবে।

তরুণদের মধ্যে নেতৃত্ব গড়ে তুলতে তাদের শক্তি ও সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে বলে মনে করেন এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। তিনি বলেন, তরুণদের মধ্যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে কাজ করার মূল্যবোধ থাকতে হবে। যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজের স্বপ্নকে তাড়া করে যেতে হবে।

বিওয়াইএলসির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইজাজ আহমেদ বলেন, নেতৃত্ব চর্চা করতে কোনো নির্দিষ্ট বয়স, লিঙ্গ বা সামাজিকভাবে অবস্থাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। নেতৃত্ব চর্চা করতে তরুণদের সদিচ্ছা ও যোগ্যতা থাকতে হবে।

তরুণদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি গড়ে তুলতে তিন দিনের সম্মেলনে বেশি কয়েকটি অধিবেশন হয়। অংশগ্রহণকারীদের একজন রাজশাহী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সেলিবিস সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি ও বেসরকারি যে কোনো খাতে কীভাবে নেতৃত্ব দেওয়া যাবে সে বিষয়ে জানতে পেরেছি। উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে বাধাগুলো কী এবং সেগুলো উত্তরণের উপায় সম্পর্কে ধারণা পেয়েছি।’