পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে দেবে গেল হাঁটাপথ

পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের খেজুরতলা এলাকায় দেবে যাওয়া হাঁটাপথের (ওয়াকওয়ে) একাংশ।  সংগৃহীত
পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের খেজুরতলা এলাকায় দেবে যাওয়া হাঁটাপথের (ওয়াকওয়ে) একাংশ। সংগৃহীত

নির্মাণাধীন আউটার রিং রোডের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের খেজুরতলা এলাকায় হাঁটাপথের প্রায় ১০০ মিটার দেবে গেছে। গত বুধবার দিবাগত রাত একটা থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার মধ্যে এটি দেবে যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এটি সড়কটি শহর রক্ষা বাঁধ হিসেবেও ব্যবহার হবে।
পতেঙ্গার খেজুরতলা এলাকার বাসিন্দা সমীরণ মহাজন প্রথম আলোকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি হাঁটতে গিয়ে সাগরপাড়ে হাঁটাপথ (ওয়াকওয়ে) দেবে যেতে দেখেন। বৃষ্টিতে বাঁধের ব্লক সরে মাটিতে হেলে পড়ে। এতে সিসি ঢালাইয়ে তৈরি ওয়াকওয়ে ধসে পড়ে। কোথাও আট ফুট, আবার কোথাও পাঁচ ফুট গর্তের সৃষ্টি হয়। ওয়াকওয়ে তৈরির জন্য সাগরের বালু দিয়ে জায়গাটি ভরাট করা হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা জানান, সাগরের পাশে মাটি সরে যাবে এটা বিবেচনায় রেখেই নকশা প্রণয়ন করতে হয়। এ ধরনের কাজ পাইলিং করে করতে হয়। এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি বলে ওয়াকওয়ের কিছু অংশ ধসে পড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি আরও বেশি হতো।
গতকাল শনিবার ধসে পড়া ওয়াকওয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে বিদ্রুপ (ট্রল) হচ্ছিল। এত বিপুল অঙ্কের টাকা বরাদ্দের পর কেন এটি দেবে গেছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এ ধরনের ঢালাইকাজে রড ব্যবহার না হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কেউ কেউ।
প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, সাগরে পানি বেড়ে যাওয়ায় ঢেউয়ের তোড়ে ব্লক সরে কিছু অংশ দেবে গেছে। এটি আবার মেরামত করা হবে—বর্ষাকালে সাগরের উপচে পড়া ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ে। বিষয়টি কেন বিবেচনায় আনা হয়নি—এই প্রশ্নের জবাবে কাজী হাসান বলেন, আসলে দেবে যাওয়া অংশটির কাজ শেষ হয়নি। যেখানে কাজ শেষ হয়েছে সেখানে কোনো সমস্যা হয়নি।
আউটার রিং রোড প্রকল্পের আওতায় ১৭ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫ দশমিক ২০ কিলোমিটার মূল ও ২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ৭২০ কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ও জাইকার সহায়তা ৭০৬ কোটি টাকা। চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। উদ্বোধনের আগে এটির কিছু অংশ ধসে পড়ে।
সিডিএ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং সড়ক থেকে সমুদ্রের দিকে নামতেই ৩০ ফুট প্রশস্তের হাঁটাপথ তৈরি হচ্ছে। পাঁচ কিলোমিটারের হাঁটাপথ, বয়স্ক ও শিশুদের জন্য বিনোদনকেন্দ্র এবং কিডস জোন, বিভিন্ন ধরনের মেকানিক্যাল ও নন-মেকানিক্যাল রাইডের কাজ চলছে।