সেই জোড়া লাগানো নবজাতকের একজন মারা গেছে

পাবনার একটি ক্লিনিকে ২৬ জুন এই জোড়া লাগানো যমজের জন্ম হয়। এদের একজন আজ ঢামেক হাসপাতালে মারা গেছে। প্রথম আলো ফাইল ছবি।
পাবনার একটি ক্লিনিকে ২৬ জুন এই জোড়া লাগানো যমজের জন্ম হয়। এদের একজন আজ ঢামেক হাসপাতালে মারা গেছে। প্রথম আলো ফাইল ছবি।

পাবনার সেই জোড়া লাগানো যমজ নবজাতকদের একজন মারা গেছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তাদের একজন মারা যায়। এরপর জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচার করে তাদের আলাদা করেন।

অস্ত্রোপচার দলের প্রধান ঢামেক হাসপাতালের নিওনেটাল সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবদুল হানিফ টাবলু প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্রোপচারের পর অন্য নবজাতকটি শ্বাস নিচ্ছে। তাকে নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ওই দুই নবজাতকের ওজন খুব কম ছিল। দুজনের মিলিত ওজন তিন কেজিরও কম। তাদের লিভার জোড়া লাগানোসহ অন্যান্য জটিলতা ছিল।

নবজাতকদের বাবা মো. ফিরোজ শেখ বলেন, পাবনায় একটি ক্লিনিকে গত ২৬ জুন তাঁর জোড়া লাগানো ছেলেদের জন্ম হয়। তারপর তাদের সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তিন দিন থাকার পর ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ফিরোজ আরও বলেন, তাঁর স্ত্রীর নাম সোনিয়া (২০)। পাঁচ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। অস্ত্রোপচার করে তাদের আরেক সন্তানের জন্ম হয়েছিল। তবে জন্মের তিন দিনের মাথায় সেই সন্তান মারা যায়। এবার জোড়া সন্তান জন্মের আগে দুইবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়েছিল। তবে সেখানে জোড়া সন্তানের এ তথ্য জানানো হয়নি। অস্ত্রোপচারের পর দেখতে পান জোড়া লাগানো। এবার অস্ত্রোপচারের পর ইনফেকশন দেখা দেওয়ায় সোনিয়া নবজাতকদের সঙ্গে ঢাকায় আসতে পারেননি। আজ এক সন্তান মারা যাওয়ার খবর শুনে সোনিয়া পাবনা থেকে ঢাকায় রওনা দিয়েছেন।

রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করা ফিরোজ জানালেন, নবজাতকদের সুস্থ করে তুলতে এ পর্যন্ত ভালোই টাকা পয়সা খরচ হয়ে গেছে। তবে ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে অনেক সাহায্য করেছেন বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

অস্ত্রোপচারের পর অন্য সন্তানকে দেখতে পাননি উল্লেখ করে ফিরোজ বলেন, ‘ডাক্তারেরা বলেছেন ছেলে ভালো আছে। আইসিইউতে আছে, তাই আমারে দেখতে দেয় নাই। আর এখন তো আমি যে (যমজের মৃতজন) মারা গেল তার কাগজপত্র নিয়া দোড়াইতাছি।’

চিকিৎসকেরা জানান, প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পরে ওই জোড়া লাগানো যমজ নবজাতকদের আলাদা করা সম্ভব হয়েছে। অস্ত্রোপচার দলের চিকিৎসকেরা হলেন জগলুল গাফফার চৌধুরী, কানিজ হাসিনা শিউলি, পার্থ সারথী মজুমদার, মাহাবুবুল আলম, আশফাক নবী, শফিকুল আলম, সারফুদ্দিন আহমেদ, সাইফুর রশিদ, মোহাম্মদ জিয়াউল হক প্রমুখ।