এলজিইডির ২৬ প্রকল্পের অগ্রগতি সন্তোষজনক না

সরকার
সরকার

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ১৫০টি প্রকল্পের মধ্যে ২৬টির অগ্রগতি সন্তোষজনক না। প্রকল্পের অগ্রগতি আশানুরূপ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। প্রকল্প পরিচালকেরা ধীর গতির কারণ হিসেবে বরাদ্দ কম পাওয়া, বর্ষা, ঠিকাদার না পাওয়ার মতো যুক্তি তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, প্রকল্প পরিচালকদের ব্যক্তিগত ব্যর্থতা এবং তারা কাজ ঠিকভাবে না করায় প্রকল্পের সুফল পেতে দেরি হচ্ছে।

আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এলজিইডি ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) বাস্তবায়ন পর্যালোচনায় এ সভা আয়োজন করা হয়।

সভার শুরুতে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী খলিলুর রহমান বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এলজিইডির ১৫০টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন ছিল। আরএডিপিতে এলজিইডির বাস্তবায়ন অগ্রগতি ছিল ৯৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এত প্রকল্পের মান নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কিছু দুর্বলতা রয়ে গেছে।

এরপর এলজিইডির প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি বিষয়ক একটি উপস্থাপনা শুরু করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের জয়েন্ট চিফ রবীন্দ্রনাথ বর্মণ। তিনি সংখ্যা, উপাত্ত দিয়ে সব প্রকল্পের উপস্থাপন শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘সহজে বুঝব এমনভাবে উপস্থাপনা দেন। এত প্রকল্পের কথা বলে কী হবে। কোনো প্রকল্পগুলোর কাজ সন্তোষজনক না সেগুলা বলেন।’ বেশ কিছুক্ষণ উপস্থাপনা চলার পরেও মন্ত্রী নিজের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এরপর এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল ওয়াদুদ মঞ্চে এসে উপস্থাপনা শুরু করেন।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলা পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন (চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার) শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক মহসিন উদ্দিন আহমেদ কাজের ধীর অগ্রগতির ব্যাখ্যায় বলেন, পাহাড়ি বন্যার কারণে অগ্রগতি সেভাবে হয়নি। এরপর একাধিক প্রকল্প পরিচালক বর্ষার কারণে কাজ ব্যাহত হওয়ার কথা বলেন।

একপর্যায়ে স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সবাই বর্ষাকে দোষারোপ করছেন। বছরের ৫-৬ মাস বর্ষা থাকে। বাকি সময় আপনারা কী করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্যালেন্ডার করার সময় বর্ষাকে মাথায় রাখেন নাই?’ তিনি বলেন, প্রকল্প পরিচালকেরা ঢাকায় থাকেন। জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীদের দিয়ে কাজ করান, এটা ঠিক না।

গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় এক হাজার ১২৩ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের জুনে নির্ধারিত সময়ে হলেও প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি মাত্র ২৫ শতাংশ। প্রকল্পের পরিচালক ভরত চন্দ্র মণ্ডলের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকাতেই কাজের এই অবস্থা। সময় চলে গেছে, কাজ শেষ হয়নি। এটি আপনার ব্যর্থতা।’ মন্ত্রী এই প্রকল্পের পরিচালক বদলানোর তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত জানান।

বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লি সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের ধীর গতির ব্যাখ্যায় প্রকল্প পরিচালক আবদুল বাছেদ মোহাম্মদ রেজাউল বারী বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাচ্ছি। এবার বরাদ্দ পেয়েছি ৫০০ কোটি টাকা, চাহিদা ছিল ১ হাজার কোটি টাকা। যে হারে বরাদ্দ পাচ্ছি, তাতে দুই বছর সময় বেশি লাগবে।’