নাটোরে চেয়ারম্যানের নাম না থাকায় ফলক ভাঙচুর

নাটোরের বড়াইগ্রামে উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নাম না থাকায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানের নামফলক ভাঙচুর করেছেন তাঁর সমর্থকেরা। পরে ব্যানার ঝুলিয়ে কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ। গতকাল রোববার এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গণপূর্ত বিভাগের পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের প্রতিবাদে উপজেলা নাগরিক কমিটির ব্যানারে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। প্রকল্পের বিষয়টি না জানানো ও অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানদের আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী।

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ চত্বরে গণপূর্ত বিভাগের উদ্যোগে উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী নামফলকে স্থানীয় সাংসদ (নাটোর-৪) আবদুল কুদ্দুসের নাম থাকলেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর নাম দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যানের সমর্থকেরা গতকাল সকালে নামফলকটির মার্বেল পাথরে লেখা অংশটুকু ভেঙে ফেলেন। পরে ক্ষতিগ্রস্ত ওই উদ্বোধনী ফলকের ওপর একটি ব্যানার লাগিয়ে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সাংসদ আবদুল কুদ্দুস।

পরে অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানদের আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী। এ সময় জেলা পরিষদের সদস্য আবুল কালাম জোয়ার্দ্দার, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খোকন মোল্লা, বনপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আযাদ, ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফুন্নেসা শিরিন, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সোবহান প্রামাণিক, জাকির সরকার ও ফেরদৌস উল আলম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, জেলা গণপূর্ত বিভাগ ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা উপজেলা পরিষদকে প্রকল্পের বিষয়ে কোনো কিছু তাঁদের জানাননি। এমনকি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের আমন্ত্রণও জানাননি। মূলত এ দুটি প্রতিষ্ঠানে লুকিয়ে থাকা জামায়াতপন্থী কর্মকর্তারা জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বিভেদ রেখে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রকল্পের অর্থ লোপাট করার জন্যই এ কাজ করেছেন। তাঁরা অবিলম্বে এসব কর্মকর্তার অপসারণ এবং উপজেলা পরিষদকে সম্পৃক্ত করে স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকল্পের কাজ করার দাবি জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি মূলত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাজ, আমরা বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে কাকে ডাকা হবে বা হবে না সেটা ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্ব।’

ইসলামিক ফাউন্ডেশন নাটোর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী ও সাংসদ আবদুল কুদ্দুস দুজনই আওয়ামী লীগের নেতা। তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ থাকায় মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ও গণপূর্ত বিভাগের কিছুই করার ছিল না।