পরিবারের সদস্যসহ চার সাংসদের সম্পদের হিসাব দিতে নোটিশ

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ক্ষমতাসীন দলের চার সাংসদ ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ঠিকানায় সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নোটিশ পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাঁরা হলেন সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, পটুয়াখালীর সাংসদ ও সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান, রাজশাহীর সাংসদ এনামুল হক এবং কক্সবাজারের সাংসদ আবদুর রহমান বদি। গতকাল সোমবার দুপুরে সাত কর্মদিবসের মধ্যেই স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তাঁদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে প্রথম আলোকে জানান দুদকের উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত জানুয়ারিতে রুহুল হক, মাহবুবুর রহমান, এনামুল হকসহ সাত সাবেক ও বর্তমান সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুদক।
এদিকে সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়ার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) সৌমেন্দ্র লাল চন্দের নামে প্রায় দুই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। একই সঙ্গে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর নামেও পৃথক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। গতকাল সৌমেন্দ্রর নামে সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নোটিশও জারি করেছে দুদক।
কমিশনে জমা দেওয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে সৌমেন্দ্র বিভিন্ন উপায়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। এসবের মধ্যে এক কোটি ৯৬ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩৭ টাকার সম্পদের কোনো ন্যায়সংগত আয়ের উৎস দেখাতে পারেননি ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর এপিএস।
প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, পাঁচ বছর আগে (২০০৯ সালে) সৌমেন্দ্র কোনো রকমে জীবন নির্বাহ করতেন। কিন্তু এখন তিনি বিপুল সম্পদের মালিক। পটুয়াখালীতে ২০১১ সালে স্ত্রী শান্তার নামে জমি কিনে তাতে ২০১৩ সালে দেড় কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি বানিয়েছেন। ৩০ লাখ টাকা দিয়ে জিপগাড়ি কিনেছেন। অথচ তাঁর স্ত্রী গৃহিণী। এ ছাড়া সৌমেন্দ্র এক কোটি ৮৯ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে তাঁর নামে সাত লাখ ৬৬ হাজার টাকা জমা রয়েছে। এ ছাড়া ভারতে বসবাসকারী তাঁর দুই ভাই ও দুই বোন ব্যবসা ও বাড়িও করেছেন গত পাঁচ বছরে। সৌমেন্দ্র হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে অর্থ পাচার করেছেন বলেও প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, ৫০৪টি হজ এজেন্সি নিয়োগ দিতে গিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতিমন্ত্রীর নামে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়েছে। যেহেতু হজ লাইসেন্সের বিষয়ে অনুমোদনকারী ছিলেন শাহজাহান মিয়া, তাই তাঁর সংশ্লিষ্টতা এড়ানো যায় না বলে তাঁর নামেও পৃথক অনুসন্ধানের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
উপপরিচালক আহসান আলী প্রথম আলোকে জানান, দুদকের জিজ্ঞাসাবাদেও সৌমেন্দ্র কোনো প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি।