জামালপুরে বন্যার পরিস্থিতির অবনতি, তিন শিশুর মৃত্যু

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে তিন লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। জেলার বিভিন্ন জায়গায় পানিতে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু ও এক কিশোর নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

মারা যাওয়া শিশুরা হলো দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের পাথরের চর গ্রামের রাকিবুল ইসলামের ছেলে সাইমুন ইসলাম (৭), একই উপজেলার পৌর শহরের চরকালিকাপুর গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে রিয়ামুল হক (২) ও মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়নের ঝারকাটা গ্রামের হারেজ উদ্দিনের মেয়ে সাদিয়া আক্তার (৭)। এ ছাড়া নিখোঁজ আছে মেলান্দহ উপজেলার খাশিমারা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে জুনাইদ ইসলাম (১৫)।

জামালপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যাদুর্গত বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, এলাকার সব সড়ক পথ পানিতে ডুবে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। নৌকা ও কলার ভেলায় দুর্গত মানুষ আশ্রয় খুঁজে বেড়াচ্ছে। ক্রমেই গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। এতে দুর্গত এলাকার ফসলি মাঠ, বাড়িঘর ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। বিশুদ্ধ পানি ও ত্রাণসামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলার সাতটি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। তবে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সবচেয়ে বেশি দুর্গত এলাকা। এ ছাড়া বকশীগঞ্জ উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেড়ে কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সোমবার সকাল থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, বন্যার পানিতে ইসলামপুর উপজেলার কয়েকটি রাস্তা ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। চারদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্গত এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় খুঁজে বেড়াচ্ছে। তবে এখন দুর্গত এলাকায় এখনো কোনো ত্রাণসামগ্রী না পৌঁছানোর অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে, পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় অনেক দুর্গত এলাকার মানুষ রাস্তা, ব্রিজ ও বাঁধের ওপর আশ্রয় নিচ্ছে।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) রাজিব কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সারা জেলায় ১৯০ মেট্রিক টন চাল, ৩ লাখ টাকা নগদ ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুর্গত এলাকায় দ্রুত ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত আমরা ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছি। যেসব এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছায়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে ত্রাণ পৌঁছানো হবে।’