রাঙামাটির দুই উপজেলায় ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই

রাঙামাটির বরকল ও জুরাছড়ি উপজেলায় ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। এতে কষ্টে রয়েছেন প্রায় দেড় হাজার গ্রাহক। বিদ্যুৎ না থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে পানিসংকটসহ ভোগান্তি বাড়ছে। 

 বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৬ জুলাই সকালে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বরকল উপজেলায় বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। টানা বৃষ্টিতে কাপ্তাই ও বিলাইছড়ির ৫০ কিলোমিটার স্থানে অন্তত ১২টি খুঁটির তার ছিঁড়ে যায় ও একটি খুঁটি ভেঙে পড়ে। এ ছাড়া বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বরকল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গাছ ভেঙে বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে। গত রোববার রাত ৯টার দিকে কাপ্তাই ও বিলাইছড়ি উপজেলা পর্যন্ত বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এখনো বরকল ও জুরাছড়ি উপজেলায় সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। 

জুরাছড়ি উপজেলার গ্রাহক বিনয় চাকমা, রবিচন্দ্র চাকমা ও বরকল উপজেলার সত্যরঞ্জন চাকমা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় বন্ধ রয়েছে পানি সরবরাহ। মুঠোফোনের ব্যাটারি চার্জ করাতে না পারায় যোগাযোগ করতে পারছেন না কারও সঙ্গে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ না থাকায় মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে।

কাপ্তাই বিদ্যুৎ কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলায় কাপ্তাই উপকেন্দ্র থেকে সংযোগ দেওয়া হয়। এতে কাপ্তাই উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলীর কার্যালয়ের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে ওই তিন উপজেলায় এখনো বিদ্যুৎ কার্যালয় স্থাপন করা যায়নি। এতে তিন উপজেলায় একজন করে অস্থায়ী কর্মচারীকে (লাইনম্যান) দায়িত্ব দেওয়া হয়। কাপ্তাই উপজেলা থেকে বিলাইছড়ি-জুরাছড়ি ও বরকল উপজেলার দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের বেশি। এতে সড়কপথ না থাকায় বিদ্যুৎ লাইনে সামান্য সমস্যা হলে সমাধান করতে সময় লাগছে। তিন উপজেলার মধ্যে বিলাইছড়ি ১ হাজার ৫০০, জুরাছড়ি ১ হাজার ও বরকলে তিন শতাধিক গ্রাহক রয়েছেন। 

জুরাছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএসও) বিপাশ খীসা প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ না থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সোলার স্থাপন ও জেনারেটরের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে আবাসিক ভবনগুলোতে পানিসংকট চরম আকার ধারণ করেছে।

জুরাছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর থেকে বিদ্যুৎ নেই। উপজেলা প্রশাসনে আবাসিক ভবনসহ বিভিন্ন স্থানে পানিসংকট দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। 

 এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাপ্তাই উপজেলা প্রকৌশলী মো. আতিকুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্গম এলাকা হওয়ায় বিদ্যুৎ–সংযোগ দিতে দেরি হচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যে কয়েক দিন চেষ্টার পর বিলাইছড়ি উপজেলা পর্যন্ত বিদ্যুৎ চালু করা সম্ভব হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে ১০০ কিলোমিটার দূরের লাইনের বেশ কিছু স্থানে খুঁটি ভেঙে ও তার ছিঁড়ে পড়েছে। জুরাছড়ি ও বরকল উপজেলায় বারবার চেষ্টা করার পরও সংযোগ দেওয়া যাচ্ছে না।