ট্রেনের ছাদ ফুটো, কামরার ভেতরেও ছাতা মাথায় যাত্রীরা!

ছাদের ফুটো দিয়ে বগির ভেতরে পড়ছে বৃষ্টির পানি। মেঝেতেও জমে আছে বৃষ্টির পানি। বাধ্য হয়ে বগির ভেতরেই ছাতা মেলতে হয়েছে অনেক যাত্রীকে। ছবি: সংগৃহীত
ছাদের ফুটো দিয়ে বগির ভেতরে পড়ছে বৃষ্টির পানি। মেঝেতেও জমে আছে বৃষ্টির পানি। বাধ্য হয়ে বগির ভেতরেই ছাতা মেলতে হয়েছে অনেক যাত্রীকে। ছবি: সংগৃহীত

সোমবার সকাল পৌনে নয়টা। কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে এসে থামতেই অনেক যাত্রী ভেজা গায়ে ট্রেন থেকে নামলেন। কিন্তু তাঁরা ঘামে ভেজা নন, বৃষ্টির পানিতে ভেজা! যাত্রার পুরোটা সময় ট্রেনের ছাদ থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ায় যাত্রীদের এমন নাকাল অবস্থা। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। যাঁদের সঙ্গে ছাতা আছে, তাঁরা বাধ্য হয়েই কামরার ভেতরে ছাতা মেলে গন্তব্যে গেছেন।

ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, ঘোড়াশাল স্টেশন অতিক্রম করার আগ পর্যন্ত ট্রেনের পরিস্থিতি খুবই নাজুক ছিল। কামরার ছাদের এখানে ওখানে অনেক ফুটো। সেসব ফুটো দিয়ে চলন্ত ট্রেনের কামরার ভেতর অনবরত বৃষ্টির পানি ঢুকছিল। যাঁদের সঙ্গে ছাতা ছিল, তাঁরা বৃষ্টির পানি থেকে বাঁচতে কামরার ভেতরেই ছাতা মেলে বসেন। যাঁদের সঙ্গে ছাতা ছিল না, তাঁরা মাথায় কাপড় দিয়ে বসেন। অনেকেই আসন ছেড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নেন।

ওই ট্রেনে করে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা আসছিলেন শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা জামান মিয়া। জানতে চাইলে পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী জামান বলেন, ‘আমি “ঘ” বগিতে ছিলাম। যতক্ষণ বৃষ্টি হয়েছে, ততক্ষণ ভেতরেও ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়েছে। বৃষ্টি বাড়লে পানি পড়াও বাড়ে। মেঝেতেও পানি জমে ছিল। আমি বগির ভেতরেই ছাতা মেলে এসেছি।’ আরেক ভুক্তভোগী ভৈরব পৌর শহরের নাদিম মিয়া বলেন, ‘কমলাপুর স্টেশনে যখন নামি, তখন শার্ট-প্যান্ট পুরো ভেজা। খুবই অস্বস্তি হচ্ছিল। এক যাত্রী আরেক যাত্রীর দিকে তাকিয়ে বিব্রত বোধ করছিল।’

এদিকে চলন্ত ট্রেনে অনেক যাত্রী ভিজে নাজেহাল হলেও এ রকম কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন ট্রেনটির তত্ত্বাবধায়ক নূর মোহাম্মদ। একই বক্তব্য ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার এ কে এম কামরুজ্জামানেরও। বগির ভেতর বৃষ্টির পানির কারণে ভিজতে হয়েছে, কেউ তাঁর কাছে এমন অভিযোগ করেননি বলেও জানান তিনি।

তবে জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ক্যারেজ ও ওয়াগন) শাহ-সুহি-নূর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এরই মধ্যে তথ্যটি জেনেছি। তবে এই মুহূর্তে কৌশলগত কারণে বগিগুলো মেরামত করা যাবে না। কারণ সামনে ঈদ। বগির চাহিদাও অনেক।’ ঈদের পর সমস্যার সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি।