ভিপি নুরুলের ওপর হামলায় নেতা-কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা পায়নি ছাত্রলীগ

নুরুল হক
নুরুল হক

গত রমজানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও বগুড়ায় দুটো ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে হামলার শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি নুরুল হক। নুরুল হকের অভিযোগ ছিল, স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাই হামলা চালিয়েছেন। তবে ঘটনা তদন্তে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের করা কমিটি সেই ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা পায়নি।

গত রমজানে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে ২৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ও ২৬ মে বগুড়ায় হামলার শিকার হয়েছিলেন ডাকসুর সহসভাপতি নুরুল হক। ৩০ মে নুরুলের ওপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ওই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে ছাত্রলীগ। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সেদিন বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে ডাকসুর ভিপির সঙ্গে সবার সম্মান জড়িত। নুরুল হক যেহেতু তাঁর ওপর হামলায় ছাত্রলীগের জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন, তাই সেই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হলো। ছাত্রলীগ কোনো ধরনের নেতিবাচক কাজকে সমর্থন করে না।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর জিএস গোলাম রাব্বানী আজ মঙ্গলবার বিকেলে ‘প্রথম আলো’কে বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তাঁরা হাতে পেয়েছেন। তদন্তে ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। বগুড়ায় তাঁদের (সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ) নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা হয়েছিল বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

২৯ মে মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে ডাকসু ভিপি নুরুল হক অভিযোগ করেছিলেন, ডাকসুর ভিপি হওয়ার পর থেকে তাঁকে হত্যার জন্য পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগের ‘সন্ত্রাসীদের’ দিয়ে হামলা করানো হচ্ছে। বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইমুর রাজ্জাক তিতাস, সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাকভিরুল ইসলাম খান ও প্রচার সম্পাদক মুকুল ইসলাম তাঁদের ওপর জঙ্গিদের মতো হামলা করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ভিপি নুরুলের অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘নুরুল হকের কাজই অভিযোগ করা। তিনি নিজেও এক সময় ছাত্রলীগ করতেন। ছাত্রলীগ অনেক বড় একটি সংগঠন। ফলে নুরুল কী বলল, তাতে কিছুই যায়-আসে না।’

এদিকে ভিপি নুরুল বলছেন, ছাত্রলীগের ওই তদন্ত কমিটিটি ছিল ‘লোকদেখানো’। সরকারের ওপর মহলের নির্দেশে ছাত্রলীগ তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি।

প্রথম আলোকে নুরুল বলেন, ‘আমার সংগঠনের (সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ) নেতা-কর্মীদের ধারাবাহিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। সরকার ভিন্নমতের মানুষের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছে। তাঁদের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগও তা-ই করছে। আমাদের বিন্দুমাত্র বিশ্বাস ছিল না যে ছাত্রলীগ আসলেই এই ঘটনার তদন্ত করবে। কারণ তাঁরা নিজেরাই হামলার সঙ্গে জড়িত।’