কাদা মাড়িয়ে বিদ্যালয়ে শিশুদের যাতায়াত

>

এ বছর ১৬১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ গত বছর ছিল ২১০ জন। বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। 

হোসেনপুরের গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাধখলা এ আর খাঁন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ। বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে কাদায় লুটোপুটি তাদের। সোমবারের ছবি।   প্রথম আলো
হোসেনপুরের গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাধখলা এ আর খাঁন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ। বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে কাদায় লুটোপুটি তাদের। সোমবারের ছবি। প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাধখলা এ আর খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতে কোনো রাস্তা না থাকায় বৃষ্টির দিনে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। জমির কাদা ভেঙে আইল ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া–আসা করে তারা। মাঝেমধ্যে কাদায় পিছলে পড়ে যায় শিক্ষার্থীরা।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হয়। এ বছর শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৬১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ গত বছর ২১০ জন শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় প্রতিবছরই শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের আশপাশে অর্ধশতাধিক দরিদ্র পরিবারের বসবাস। তাদের নিজেদের চলাচলের রাস্তা নেই। তাই রাস্তা নির্মাণে তাঁরা কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না। ফলে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে বারবার ধরনা দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাবিহীন এ বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শুকনো মৌসুমে জমির আইল ধরে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুম এলেই তাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রিফাত ও তাহমিনা আক্তার বলে, রাস্তা না থাকায় বিদ্যালয়ে যেতে তাদের অনেক কষ্ট হয়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে জমির আইল দিয়ে স্কুলে যাওয়ার সময় কাদায় পড়ে অনেকে ব্যথা পায়। বই–খাতা ভিজে যায়। সে জন্য বিদ্যালয়ে আসতে ইচ্ছা হয় না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক খান জানান, প্রতিষ্ঠানটির এ দুর্ভোগ লাঘবের জন্য তিনি জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার লিখিত আবেদন করেছেন। কর্মকর্তারা কয়েকবার বিদ্যালয় পরিদর্শন করলেও এত দিনেও রাস্তা আর আলোর মুখ দেখেনি। ফলে বিদ্যালয় থেকে দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ঝরে পড়ছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি নির্মাণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাদিকুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি ও এলাকাবাসীকে নিয়ে অচিরেই রাস্তা নির্মাণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমল কুমার ঘোষ বলেন, শিক্ষার্থীরা যে জমির আইল ধরে বিদ্যালয়ে যায়, সেটি যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এক ব্যক্তির জমি। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। তাঁর সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে রাস্তা নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।