চট্টগ্রামে তৎপর হয়ে উঠছে মলম পার্টির সদস্যরা

চট্টগ্রামে তৎপর হয়ে উঠছে মলম পার্টির সদস্যরা। গত মঙ্গল ও বুধবার নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচজনকে মলমসহ গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তাঁরা চোখে মলম লাগিয়ে মানুষের কাছ থেকে জিনিসপত্র লুট করার কথা স্বীকার করেছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, নগরের নিউমার্কেট, টাইগারপাস, কদমতলী বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, অক্সিজেন মোড়, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল, অলংকার মোড়, জিইসি মোড়, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, আগ্রাবাদ, হালিশহরসহ নগরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়ে ছদ্মবেশে রয়েছেন মলম পার্টির সদস্যরা। কখনো সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের বেশে, আবার কখনো যাত্রীবেশে ঘুরে বেড়ান তাঁরা। এ ছাড়া পথচারী সেজেও থাকেন। সুযোগ পেলেই লোকজনের চোখে মলম লাগিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে যান। কিন্তু ভুক্তভোগীরা বেশির ভাগ সময় মামলা না করায় এরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যান।

 মঙ্গলবার নগরের খুলশী থানার আমবাগান এলাকা থেকে মলম পার্টির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। তাঁরা হলেন রফিক মিয়া ও জাহাঙ্গীর আলম। ওই সময় তাঁদের কোমরে গুঁজে রাখা চেতনানাশক সরঞ্জাম ও মলম উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা মলম পার্টির সদস্য বলে স্বীকার করেছেন। এই ঘটনায় খুলশী থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার মলম পার্টির দুই সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

>

বাস-রেলস্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সক্রিয় আছে মলম পার্টির সদস্যরা। দুদিনে গ্রেপ্তার পাঁচজন।

শুনানি শেষে আদালত বুধবার তাঁদের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আমবাগান এলাকায় দুজনকে গ্রেপ্তারের পরদিন বুধবার নগরের বহদ্দারহাট থেকে সোহরাব হোসেনকে, বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন এলাকা থেকে সাহাবুদ্দিন ও মো. মাহাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রত্যেকের কাছ থেকে চেতনানাশক সরঞ্জাম ও মলম উদ্ধার করা হয়। কোমরে থাকা গামছার ভেতর তাঁরা বিশেষ কৌশলে এগুলো লুকিয়ে রাখেন। যাতে সহজে কেউ বুঝতে না পারে তাঁরা মলম পার্টির সদস্য।

চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) আবু বক্কর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, নগরের বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় থাকা মলম পার্টির সদস্যদের ধরতে নগর পুলিশের সদস্যরা সক্রিয় রয়েছেন। তাঁরা কিছু করার আগেই পুলিশ গ্রেপ্তার করছে। মলম পার্টির পলাতক সদস্যরা যাতে রাস্তায় নামতে না পারে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।

আবু বক্কর সিদ্দিক আরও বলেন, ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে মলম পার্টির সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠছেন। তাঁরা যাতে সংগঠিত হতে না পারে গরুর বাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অভিযান জোরদার রয়েছে।

মলম পার্টির সদস্যদের হাতে যাতে কেউ হয়রানির শিকার না হন নগরবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, রাস্তায় অপরিচিত কারও কাছ থেকে যাতে কেউ কিছু না খান। নগদ টাকা পরিবহন ও রাস্তায় চলাফেরার সময় সতর্ক থাকতে হবে।