সিইসি বাদশাহর মেহমান হয়ে হজে যেতে পারতেন: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

হজ ব্যবস্থাপনার কাজ তত্ত্বাবধানের জন্য সরকারের প্রতিনিধিদলের সদস্য হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সৌদি আরব যাওয়ার সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এর নিন্দা জানিয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন। মির্জা ফখরুল বলেছেন, সিইসি হজে যেতে চাইলে সৌদি বাদশাহর বিশেষ মেহমান হয়ে যেতে পারতেন।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ফখরুল এসব কথা বলেন।

হজ ব্যবস্থাপনার কাজ সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাসহ ১০ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল সৌদি আরব যাবে। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কর্মকর্তা তিনি আজকে হজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবে সৌদি আরব যাবেন হজ করতে। উনি যদি হজ করতে চাইতেন, উনি বাদশাহর বিশেষ মেহমান হয়ে যেতে পারতেন। এই যে আত্মসম্মান বিবর্জিত ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনের প্রধান করা হয়। যার ফলে আমাদের দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে এইভাবে দেখেছি, যে তারা নির্বাচনকে ব্যবস্থাকে কোথায় নিয়েছে তারই এটা একটা প্রমাণ।’ তিনি এর নিন্দা জানিয়ে সরকারের কাছ থেকে ব্যাখ্যা দাবি করেছেন।

দেশের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের যে উদ্যোগ প্রয়োজন সেটা দেখা যাচ্ছে না। সরকারের বন্যার ব্যাপারে উদাসীন এবং পাশে দাঁড়াচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ত্রাণমন্ত্রী কোথাও ঘুরে আসেননি। সরকারের পদক্ষেপগুলো মানুষ দেখতে চায়। আপনারা পত্রিকায় কি ছবি দেখছেন যে কোনো মন্ত্রী এলাকাতে গেছেন বা বন্যাকবলিত এলাকায় হেলিকপ্টার মুভ করেছে? দেখেন নাই। অর্থাৎ সরকারের যে জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই, সেটা বোঝা যায়।’

সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি আদালতের ভেতরে গিয়ে হত্যা, শিশুর মাথা কেটে ফেলা, প্রকাশ্যে হত্যা, মিন্নির গ্রেপ্তার, র‍্যাব সদস্যের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহম্মাদকে সুব্রত বাইন পরিচয়ে হুমকিসহ বিভিন্ন বিষয়ের সমালোচনা করেন। এ ছাড়া বলেন, দু-একটা কথা বলা বা কোনো একটা বির্তকের মধ্যে রাজনীতিক দলগুলো সীমাবদ্ধ থাকে বা সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো সীমাবদ্ধ থাকে তাহলে দেশ চরম পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে। তিনি জাতীয় ঐকমত্যের ওপর গুরুত্ব দেন।

ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করেছে জানিয়ে সিটি করপোরেশনের সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি ২১ সদস্যের একটি ত্রাণ কমিটি গঠন করে। এর আহ্বায়ক করা হয়েছে স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সদস্য সচিব ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রশীদ ইয়াসীনকে। কমিটিতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সংশ্লিষ্ট জেলার নেতৃবৃন্দও থাকবেন। মির্জা ফখরুল জানান, এই ত্রাণ কমিটি দ্রুতই তাদের কাজ শুরু করবে।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।