রোহিঙ্গা তরুণী কি ধর্ষণ থেকে বাঁচতে ছেলেটির সাহায্য চেয়েছিলেন?

বান্দরবান
বান্দরবান

বান্দরবানে ছেলেধরা সন্দেহে এক রোহিঙ্গা তরুণীকে (১৮) পিটুনি দিয়ে পুলিশে হস্তান্তর করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা শহরের বালাঘাটা এলাকার পাহাড়ি অঞ্চলে এ ঘটনা ঘটে। তবে ওই তরুণীর দাবি, তিনি ধর্ষণ থেকে বাঁচতে ওই এলাকা দিয়ে পালাচ্ছিলেন। তখন একটি ছেলেকে দেখে তার সাহায্য পেতে ডাক দেন।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বালাঘাটার লেমুঝিরি ও অক্ষ্যংঝিরির মাঝামাঝি পাহাড়ে বিজয় ইসলাম শুভ (১৫) নামের এক কিশোর গরু চরাচ্ছিল। এ সময় তিন তরুণ ও আটক তরুণী তাকে ধাওয়া করেন। এতে কিশোরের চিৎকারে এলাকাবাসী ওই তরুণীকে ধরে ফেলেন।

কিশোর বিজয় ইসলাম প্রথম আলোকে বলে, সে গরু চরানোর সময় হঠাৎ ওই তরুণী এসে তাঁর সঙ্গে যাওয়ার জন্য ডাকেন। সে যেতে অস্বীকার করলে তরুণী তাকে ধাওয়া করেন। এ সময় আরও তিন তরুণ তাকে ঘেরাও করার চেষ্টা করেন। তখন সে চিৎকার করলে তরুণেরা পালিয়ে যান। আর পালিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে গেলে লোকজন তরুণীকে ধরে ফেলেন। সরেজমিনে দেখা যায়, লেমুঝিরি ও অক্ষ্যংঝিরির মাঝামাঝি পাহাড়ের ঢালে পাহাড়ি-বাঙালি অনেক পরিবার বসবাস। কিশোর বিজয় ইসলামের বাড়ি অক্ষ্যংঝিরিতে।

এদিকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোকেয়া বেগম (১৮) প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ছেলেধরা নন। উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে থাকেন। তিনি বিবাহিত। স্বামীর নাম হামিদ উল্লাহ। শরণার্থী শিবির থেকে তাঁর বাবার সঙ্গে চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে গিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বের হলে তিন যুবক তাঁকে ট্যাক্সিতে তুলে সরাসরি বান্দরবানে নিয়ে আসেন। এরপর ওই পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে তাঁরা তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তিনি পালানোর চেষ্টা করার সময় পথে ওই কিশোরের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি কিশোরের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিশোর ভুল বুঝে চিৎকার দিলে এলাকাবাসী এসে তাঁকে পিটুনি দেন।

রোকেয়া বেগম বলেনে, যে তিন তরুণ তাঁকে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানে নিয়ে আসেন তিনি তাঁদের নাম জানতে পেরেছেন। তবে তাঁদের বাড়ি কোথায় তা জানাতে পারেননি। রোকেয়ার ভাষ্য মতে, ওই তিন তরুণের নাম রহমত উল্লাহ, আয়াত উল্লাহ ও জাবেদ।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা তরুণীকে চট্টগ্রাম থেকে কারা, কীভাবে, কী উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছেন, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পিটুনিতে তিনি সামান্য আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। ওসি আরও বলেন, দেশব্যাপী ছেলেধরার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। ছেলেধরার গুজবে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্যও তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।