স্মৃতির ময়নাতদন্তে মিলেছে ধর্ষণের আলামত

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ‘নিহত’ নবম শ্রেণির ছাত্রী স্মৃতি আক্তারকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। এ ব্যাপারের জাহিদ নামের এক যুবকসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা হয়েছে।

শুক্রবার স্মৃতি আক্তার ওরফে রীমার (১৫) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত শেষে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন মো. হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। গণধর্ষণ কি না, তা স্পষ্ট বোঝা না গেলেও অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে একাধিক ব্যক্তি হতে পারে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে স্মৃতি আক্তারের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ছাত্রীর পরিবারের দাবি, গণধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের গাংধোয়ারচর গ্রামে বুধবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। নিহত স্মৃতি আক্তার জেলার হোসেনপুর উপজেলার জামাইল গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের মেয়ে এবং হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

স্মৃতির মামি নাজমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, যে গাছের সঙ্গে লাশ পাওয়া যায়, তার ১০ গজের মধ্যে স্মৃতির মুঠোফোন পড়ে ছিল। তাতে রাত সাড়ে ১০টার সময় তার প্রেমিক জাহিদের কল দেখা যায়। নাজমাসহ স্মৃতির অন্য স্বজনদের অভিযোগ, সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর বুধবার রাতে স্মৃতিকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে যায় জাহিদ। এরপর কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করে।

স্মৃতির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, স্মৃতি তাঁর অসুস্থ নানিকে দেখতে মায়ের সঙ্গে গত মঙ্গলবার নানাবাড়িতে আসে। তাঁরা আরও জানান, স্মৃতি প্রায়ই নানাবাড়িতে বেড়াতে আসত। এই সুবাদে পার্শ্ববর্তী চরফরাদী গ্রামের খুরশিদ উদ্দিনের ছেলে জাহিদ মিয়ার (২৭) সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় স্মৃতির মা আঙ্গুরা খাতুন জাহিদকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় আরও চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়ে।

এদিকে স্মৃতির মৃত্যুকে হত্যা উল্লেখ করে অপরাধীদের বিচারের দাবিতে শনিবার হোসেনপুর পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করবেন। যোগাযোগের চেষ্টা করেই অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জাহিদের মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।