লঞ্চের কেবিনে নারীর মরদেহ!

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরিশাল-ঢাকা নৌপথে চলাচলকারী এমভি সুরভী-৮ নামে একটি লঞ্চের নিচতলার স্টাফ কেবিন থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে লঞ্চটি বরিশাল নৌবন্দরে নোঙর করার পর লঞ্চের সব যাত্রী নেমে গেলে কেবিনে ওই নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন লঞ্চের কর্মচারীরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।


লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন থেকে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। গলায় আঁচড়ের অনেক চিহ্ন রয়েছে।

পরে ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তাঁর নাম আঁখি আক্তার (২৯)। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের অনন্ত অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফ্যাশন লিমিটেড নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানার কর্মী ছিলেন। তিনি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রিশিবপুর এলাকার বড় পুইয়া উটা গ্রামের বজলু ব্যাপারীর মেয়ে।

নিহত আঁখির বাবা বজলু ব্যাপারী জানান, তাঁর মেয়ের দুই বছরের মেয়ে রয়েছে। স্বামীর সঙ্গে কলহ থাকায় সেই সন্তান নানাবাড়িতে থাকে। তিনি জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য তাঁর মেয়ে গ্রামের বাড়ি আসছিলেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে ঢাকা থেকে বরিশালগামী এমভি সুরভী-৮ লঞ্চে করে আঁখি বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেন। তিনি একাই আসছিলেন বলে তিনি জানতেন। লঞ্চে ওঠার সময় আঁখির সঙ্গে একবার ফোনে কথা হলেও রাতে আর কথা হয়নি। সকালে আঁখি বাড়িতে না এলে ও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া গেলে খোঁজ করার জন্য লঞ্চঘাটে আসেন। লঞ্চঘাটে এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, লঞ্চের স্টাফ কেবিন থেকে আঁখির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সুরভী-৮ লঞ্চের পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন জানান, গতকাল রাতে ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে লঞ্চের নিচতলার স্টাফ (লস্কর) কেবিনে ওঠেন আঁখি আক্তার। এ সময় তাঁর সঙ্গী ছিলেন এক যুবক। রাতে ওই দুজন দুটি ডেক টিকিটও সংগ্রহ করেন। তবে আজ সকালে স্টাফরা ওই কেবিনে গিয়ে আঁখিকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গীকে পাওয়া যায়নি।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া না গেলেও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ওসি জানান, আঁখি আক্তারের সঙ্গে থাকা যুবকের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। লঞ্চের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুত মৃত্যুরহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হবে।