সিরাজগঞ্জে এক রাতে তিন স্কুলছাত্রীর বাল্যবিবাহ বন্ধ

বাল্যবিবাহ । প্রতীকী ছবি
বাল্যবিবাহ । প্রতীকী ছবি

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গতকাল শুক্রবার অপ্রাপ্তবয়স্ক তিন মেয়ের বিয়ের আয়োজন বন্ধ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শিয়ালকোল ইউনিয়নের একটি গ্রামে গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিয়ের আয়োজন চলছিল। কনে স্থানীয় একটি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী (১৫)। বর পাশের চণ্ডীদাসগাঁতী গ্রামের আবু বকর সিদ্দীকের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২২)। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিয়েবাড়িতে উপস্থিত হন সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম মো. আনিসুর রহমান। সঙ্গে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

তাঁদের উপস্থিতি টের পেয়ে কাজি কৌশলে পালিয়ে যান। কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কনের বাবা ও বর আশরাফুল ইসলামকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এ সময় কনের বাবার কাছ থেকে মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা নেওয়া হয়।

এরপর রাত আটটার দিকে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার একটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ বাড়ির কনে স্থানীয় একটি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী (১৪)। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেন। কনের বাবার কাছ থেকে কনে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা নেওয়া হয়।

পরে রাত নয়টার দিকে পৌরসভার আরেকটি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কনে স্থানীয় একটি উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী (১৪)। তখন কনের বাড়িতে বিয়ের আলাপ-আলোচনা চলছিল। কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে মেয়েটির মায়ের কাছ থেকে মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা নেওয়া হয়। অভিযান তিনটিতে সহায়তা করেন পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।

আজ শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম মো. আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, লুকিয়েও আর বাল্যবিবাহ দেওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসন খবর পেয়ে যাচ্ছে। পরিবার, বিশেষ করে মা–বাবা এ বিষয়ে সচেতন হলে বাল্যবিবাহ পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ জন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।