শ্বশুরকে হত্যার পর জামাই পলাতক

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় নাহিদ হাসান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাঁর শ্বশুরকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যার আলামত নষ্ট করতে পেট কেটে খালের পানিতে ফেলে দিয়েছে তিনি। লাশ উদ্ধার ও হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর আগে উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের শিয়ালি গ্রামের রুবেল আকন্দের (৫৫) মেয়ে রুমা আকতারের (২০) সঙ্গে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের নিমগাছি গ্রামের জাহেদুর রহমানের ছেলে নাহিদ হাসানের (২২)। বিয়ের সময় নাহিদকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। বিয়ের পর শ্বশুরের কাছে আরও এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন নাহিদ। কিন্তু যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় শ্বশুরের সঙ্গে নাহিদের বিরোধ দেখা দেয়। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার সকালে রুবেল আকন্দের স্ত্রী ফরিদা খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন বুধবার দুপুরে শ্বশুরের সঙ্গে নাহিদ তাঁর শাশুড়িকে হাসপাতালে ভাত দিতে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যার দিকে শ্বশুর-জামাই একসঙ্গে বাড়ির ফেরার কথা বলে চলে আসে। পথে গাবতলি উপজেলার বেলতলী সেতুর পাশে রাত আটটার দিকে নাহিদ তাঁর শ্বশুরের গলা করে হত্যা করেন। হত্যার আলামত বিনষ্ট ও লাশ গায়েব করতে ছুরি দিয়ে পেট কেটে পাশে সোনাইখালী খালের পানিতে ফেলে দিয়ে শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসেন নাহিদ।

পুলিশ জানায়, পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে রুমা আকতার স্বামী নাহিদের কাছে তাঁর বাবার বাড়িতে না ফেরার কারণ জানতে চান। কিন্তু নাহিদ শ্বশুরকে খোঁজার কথা বলে পালিয়ে যান। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রুবেল আকন্দের লাশ সোনাইখালীর খালে ভেসে ওঠে। এই ছবি তুলে এলাকাবাসী ফেসবুকে পোস্ট করেন। ফেসবুকে এই ছবি দেখে রুবেল আকন্দের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই সোনাইখালী খাল থেকে রাতে রুবেল আকন্দের লাশ ধুনট উপজেলার বাঙ্গালী নদী দিয়ে ভেসে যায়। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ লাশের সন্ধান পায়নি। এ ঘটনার শুক্রবার রাতে রুবেলের স্ত্রী ফরিদা খাতুন বাদী হয়ে নাহিদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ করেছেন।

রুবেল আকন্দের স্ত্রী ফরিদা খাতুনের অভিযোগ, নাহিদের সঙ্গে যৌতুক নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ কারণে তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছে নাহিদ।
ধুনট থানার এসআই প্রদীপ কুমার বলেন, রুবেল আকন্দের লাশে গলা ও পেট কাটা ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা তাঁদের জানিয়েছে।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, যেখানে রুবেলকে হত্যা করা হয়েছে সেখানে রক্ত পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তে নাহিদের বিরুদ্ধে তাঁর শ্বশুরকে হত্যার সত্যতা পাওয়া গেছে।