টেকনাফে 'বন্দুকযুদ্ধে' মাদক মামলার আসামি নিহত

বন্দুকযুদ্ধ। প্রতীকী ছবি
বন্দুকযুদ্ধ। প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আবদুল মালেক ওরফে মালেক মিস্ত্রি (৩৮) নামের একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের উত্তর লেঙ্গুরবিল মালির মাঠছড়া পাহাড়ের পাদদেশে এ ঘটনা ঘটে। প্রথম আলোকে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস।

নিহত মালেক টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নতুন পল্লানপাড়ার বাসিন্দা।

পুলিশের ভাষ্যমতে, মালেক একজন তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি মাদক ও অস্ত্র মামলার পলাতক আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে রামু ও টেকনাফ থানায় ছয়টি মামলা আছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি দেশীয় অস্ত্র (এলজি), শটগানের ১৩টি তাজা গুলি, ২১টি গুলির খোসা ও ৫ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি প্রদীপ কুমার দাসের ভাষ্য, গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে পৌর বাস টার্মিনালের সামনের সড়ক থেকে পুলিশের একটি টহল দল আবদুল মালেক ওরফে মালেক মিস্ত্রিকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকারোক্তি দেন, ইয়াবার একটি বড় চালান টেকনাফ সদরের উত্তর লেঙ্গুরবিলের মালির মাঠছড়া পাহাড়ের পাদদেশে মজুত করা হয়েছে। সেই সূত্র ধরে তাঁকে নিয়ে একদল পুলিশ সদস্য অভিযানে গেলে মালেকের সহযোগী মাদক কারবারিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রামধন চন্দ্র দাস, কনস্টেবল আবদুস শুক্কুর ও রাজু মজুমদার আহত হন।

ওসির দাবি, পুলিশও তখন আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় পালাতে গিয়ে উভয় পক্ষের মাঝখানে পড়ে আবদুল মালেক গুলিবিদ্ধ হন। পরে সংঘবদ্ধ মাদক পাচারকারীরা কৌশলে পিছু হটেন। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজন মাদক কারবারি ও পুলিশের তিনজন সদস্যকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশ ৫০টি গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ মাদক কারবারিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে পুলিশ চারজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাঁদের মধ্যে আবদুল মালেকের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। আহত তিন পুলিশ সদস্যকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মালেকের বুকে দুটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে।

ওসি বলেন, কক্সবাজার নেওয়ার পথে মালেক মারা যান। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

গত বছরের ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ে র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ ও এলাকায় মাদকের প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরনের ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন নারীসহ ২৬ জন রোহিঙ্গা।