বন্যা আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা

ভারতের পাশাপাশি চীনের বন্যার পানি বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করলে চলমান বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে এ আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলা করার প্রস্তুতি রেখেছে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এই আশঙ্কার কথা জানান। তিনি বলেন, এখন ২৮টি জেলা বন্যা কবলিত। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাদের প্রস্তুতি আছে। কিছু ক্ষেত্রে ত্রাণ কম পাওয়া বা না পাওয়ার অভিযোগ থাকতে পারে। হতে পারে যেখানে ১০০ টন ত্রাণ সাহায্য দরকার, হয়তো দেওয়া হয়েছে কয়েক টন। তবে, মন্ত্রণালয় এসব মনিটর করছে। মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম যেন আরও গতিশীল ও কার্যকর হয়, কমিটি সেদিকে নজর দিতে বলেছে। তবে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা নিয়ে সংসদীয় কমিটি সন্তুষ্ট।

বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে অপ্রয়োজনীয় সেতু-কালভার্ট নির্মাণ নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির একজন সদস্য বলেন, দেখা যায় এমন জায়গায় ছোট সেতু করা হয়েছে যার সঙ্গে কোনো সংযোগ সড়ক নেই। ফলে এটি কোনো কাজে আসছে না। কমিটির এ বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম বলেন, দেখা যায় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানেরা সিদ্ধান্ত দেন কোথায় সেতু লাগবে। কোথায় সেতু হলে ইকোলজিক্যাল ব্যালান্স হবে, এটা তাঁদের জানার কথা নয়। আবারও কোথাও কালভার্ট করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু ওই কালভার্টে ওঠার জন্য আরেকটা সেতু দরকার। এ জন্য কমিটি বলেছে, প্রকৌশলীদের মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করে সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করতে হবে। যেন মানুষ এর সুবিধা পায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ও ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কাবিখা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় গম কিন্তু উপজেলা থেকে তাঁরা পান চাল। গমের চেয়ে চালের দাম কম। তাই হিসাব মিলাতে গিয়ে চেয়ারম্যানদের মিথ্যার আশ্রয় নিতে হচ্ছে। কমিটি এটি স্বচ্ছতার মধ্যে আনতে বলেছে। আর ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্পে (কাবিটা) শ্রমিকদের নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু যে টাকা দেওয়া হয়, ওই টাকায় শ্রমিক পাওয়া যায় না। ফলে অনেকে যন্ত্রের ব্যবহার করেন। আর অস্তিত্বহীন শ্রমিকদের নামে টাকা ‍তুলে নেন। এটা এভাবে অনির্দিষ্ট কালের জন্য চলতে পারে না। কোন প্রক্রিয়ায় গেলে চেয়ারম্যান বিপদে পড়বেন না, আর সরকারে উদ্দেশ্য হাসিল হবে, সেটা দেখতে হবে। বাস্তবতার নিরিখে এই সমস্যার সমাধান বের করত মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।

তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার, আফতাব উদ্দিন সরকার, মীর মোস্তাক আহমেদ, জুয়েল আরেং, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ও কাজী কানিজ সুলতানা বৈঠকে অংশ নেন।