স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কের আগাছা পরিষ্কার করলেন গ্রামবাসী

সড়কে বেড়ে ওঠা আগাছার আড়ালে লুকিয়ে থেকে ডাকাতি করত দুর্বৃত্তরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর না দেওয়ায় এলাকাবাসী ঝোপ পরিষ্কারে নেমে পড়েছেন। মাধবপুর, হবিগঞ্জ, ২১ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো।
সড়কে বেড়ে ওঠা আগাছার আড়ালে লুকিয়ে থেকে ডাকাতি করত দুর্বৃত্তরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজর না দেওয়ায় এলাকাবাসী ঝোপ পরিষ্কারে নেমে পড়েছেন। মাধবপুর, হবিগঞ্জ, ২১ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো।

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া-বানেশ্বর সড়ক। এই সড়কের দুই পাশে প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে অযত্নে বেড়ে উঠেছে ঝোপঝাড় ও আগাছা। রাতের বেলা এই ঝোপঝাড় হয়ে ওঠে চোর-ডাকাতের অভয়াশ্রম। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদাসীন। তাই এলাকার লোকজন নিজেরাই নেমে পড়েছেন এসব আগাছা পরিষ্কারে। স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে ঠিকই দুপাশের আগাছা উপড়ে ফেলেছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পশ্চিমে আন্দিউড়া-বানেশ্বর সড়কের অবস্থান। গত কয়েক বছরে এই তিন কিলোমিটার সড়কের দুপাশে অসংখ্য আগাছা জন্মেছে। রাতে এই সড়কে কিছুদিন পরপর চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। সড়কের পাশে প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে ওঠা গাছগাছালির ঝোপ ডাকাতদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। এই কারণে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী রাতের বেলা এই সড়কে যাতায়াত প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। বিষয়টি মাধবপুর থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজমিরুজ্জামানের নজরে আসে। সম্প্রতি তিনি বিষয়টি নিয়ে বানেশ্বর ও মাহমুদপুর গ্রামের লোকজনের সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকে তিনি এলাকাবাসীর সহযোগিতা চান। গ্রামবাসীর ওই বৈঠকে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে রাস্তার দুপাশের আগাছা পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী গতকাল শনিবার ও আজ রোববার গ্রামবাসী দল বেঁধে দা, কুড়াল ও কোদাল হাতে আগাছা পরিষ্কারে নেমে যান। দুই দিনে তাঁরা প্রায় দুই কিলোমিটার আগাছা পরিষ্কার করেছেন। সড়কের দুপাশ পুরোপুরি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত গ্রামবাসী তাঁদের এ কার্যক্রম চালাবে।

মিজানুর রহমান নামের এক গ্রামবাসী বলেন, সড়কের দুপাশে তিন-চার ফুট উঁচু আগাছা জন্মায়। মাধবপুর থানার নবাগত ওসির উৎসাহে গ্রামবাসী তা পরিষ্কারে নেমেছেন।

সাছুল আলম নামে অন্য এক গ্রামবাসী বলেন, বানেশ্বর ও মাহমুদপুর গ্রামের অনেক মানুষ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করে। তারা নানা সময় ডাকাতের ভয়ে এই পথ দিয়ে রাতে বাড়িতে ফিরতে পারে না।

মাধবপুর থানার ওসি কে এম আজমিরুজ্জামান বলেন, ‘গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন দেখে বেশ ভালো লাগছে। রাতে টহল পুলিশ এ সড়ক দিয়ে টহল দিতে গেলে রাস্তার পাশের বেড়ে ওঠা ঝোপের কারণে পুরো নজরদারি করতে পারি না। এখন সড়কের দুপাশ পরিষ্কার হওয়ায় এবার দুর্বৃত্তরা আতঙ্কে থাকবে।’