'প্রতিকারের জন্য কার কাছে যাব'

উভয় পাশে জায়গা থাকা সত্ত্বেও এক পাশ দিয়ে সড়ক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি ব্যবহার করা হচ্ছে। বিষয়টি মানতে নারাজ ওই জমির মালিক তন্ময় হক। প্রতিকার চেয়ে তন্ময় জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ও ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

দুদক আয়োজিত গণশুনানিতে এ বিষয় নিয়ে বক্তব্য দেন তন্ময়। সবাই আশ্বাস দিয়েছে। এরপরও কোনো ফল পাচ্ছেন না তিনি।

তন্ময় হকের প্রশ্ন, ‘প্রতিকারের জন্য কার কাছে যাব। সরকারি কর্মচারীরা কোনো কথাই শুনতে চাচ্ছেন না।’

সওজ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর দৌলতখালী হয়ে মথুরাপুর সড়কে পুনর্নির্মাণকাজ চলছে। প্রায় ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক ও সড়কে চারটি কালভার্ট নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩১ কোটি টাকা। সড়কটি ১০ থেকে ১২ ফুট চওড়া ছিল। সড়কের উভয় পাশে আরও চার ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান গত বছরের শেষের দিকে কাজ শুরু করেন। আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, সড়ক নির্মাণের সময় ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি ব্যবহার করা হয়েছে। দৌলতখালীর মাদ্রাসা মোড়ে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই জমির মালিক দাবিদার তন্ময় হক। তিনি ১৩ থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ, ইউএনও ও সওজ কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, মাদ্রাসা মোড়ে সড়কের উভয় পাশে সড়কের জায়গা আছে। মথুরাপুরের দিকে যেতে সড়কের ডান পাশে তাঁর নতুন পাকা মার্কেট আছে। সড়ক নির্মাণের সময় বাঁ পাশে প্রশস্ত না করে ডান দিকে আট ফুট প্রশস্ত করা হয়েছে। সড়কের বাঁ পাশে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কয়েকটি অবৈধ দোকান রয়েছে। ওই দোকানগুলো রক্ষার জন্যই ডান দিকে সড়কটি বেঁকে গেছে।

তন্ময় বলেন, উভয় পাশে চার ফুট করে প্রশস্ত করলে তাঁর কোনো অভিযোগ থাকবে না। কিন্তু সম্পূর্ণ জবরদখল করে এক দিকে বাড়িয়ে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ইট, বালু ও খোয়া ফেলে সড়কের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়ে গেছে।

ঠিকাদার মিজানুর বলেন, সওজ কর্মকর্তা ও স্থানীয় ব্যক্তিদের দেখানোমতেই সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে ঠিকাদারের কিছু করার নেই।

সওজের কুষ্টিয়া বিভাগীয় কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী এস এম ফারুক আহমেদ ওই সড়কের তদারকির দায়িত্বে আছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঠিকাদার সড়কের কাজ করেছেন। মূল সড়কের উভয় পাশে চার ফুট করে সড়ক প্রশস্ত করতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া ছিল। যে জায়গা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সেখানে যাওয়া হয়নি। সড়কটি সওজ নির্মাণ করলেও এটির কাগজপত্র জেলা পরিষদের কাছে আছে। উভয় প্রতিষ্ঠানের সার্ভেয়ার দিয়ে জায়গাটি পরিমাপ করা হবে।

দৌলতপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজগর আলী বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। যুবকের অভিযোগের কিছুটা সত্যতা থাকতে পারে। জায়গাটা পুরোপুরি পরিমাপ করা দরকার। আরও তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তারপর বিস্তারিত বলতে পারব।’

সওজের নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তারপরও বিষয়টি সঠিক পরিমাপের জন্য জেলা পরিষদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, সড়কের সঠিক জায়গা পরিমাপের জন্য সওজকে সহায়তা করা হবে। সার্ভেয়ার পাঠিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে ইউএনওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।