আনোয়ারায় ৮ বাড়িতে বন্য হাতির তাণ্ডব

চট্টগ্রামের আনোয়ারা বন্য হাতির আক্রমণে ভাঙা ঘরবাড়ি। ছবি: মোরশেদ হোসেন
চট্টগ্রামের আনোয়ারা বন্য হাতির আক্রমণে ভাঙা ঘরবাড়ি। ছবি: মোরশেদ হোসেন

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় আবারও আটটি ঘরে তাণ্ডব চালিয়েছে বন্য হাতি। গতকাল রোববার রাতে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের মধ্যম গুয়াপঞ্চক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল রাত আটটার পর একটি হাতি জালাল আহমেদ, জাগির আহমেদ, আবদুল কাদের, মোহাম্মদ ইদ্রিস, আবদুল খালেক, আবদুল হক, মোহাম্মদ আলমগীর ও হাসন আলীর ঘরের দেয়াল ভেঙে দেয়।

হাতি রাতভর বাড়িগুলোর গাছ, দরজা, দেয়াল, রান্নাঘর ভাঙে আর আসবাবপত্র তছনছ করে। পাশাপাশি জালাল আহমদের ঘরের তিন বস্তা ধান ছিটিয়ে দেয়।

ওই সময় আতঙ্কিত লোকজন দুটি পাকা ঘরের ছাঁদে উঠে অবস্থান নেয়। হাতিটি ফজরের আজানের পর পাহাড়ে উঠে গেলে লোকজন ঘরে ফেরে।

স্থানীয় লোকজন জানান, গত এক বছরে আনোয়ারায় হাতির আক্রমণে তিনজন নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন সময়ের হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। হাতির আক্রমণে শতাধিক ঘর ধ্বংস হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, বন বিভাগ আর প্রশাসন হাতি তাড়াতে ব্যর্থ হওয়ায় বারবার একই ঘটনা ঘটছে।

এ ব্যাপারে জানতে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আ ন ম ইয়াসিন নেওয়াজ বলেন, ‘আনোয়ারায় হাতির আক্রমণের ব্যাপারে আমরা উদাসীন নই। আমরা উদ্যোগী হচ্ছি কীভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা যায়। ইতিমধ্যে সেখানে পাহারা দল গঠন করা হয়েছে।’

আ ন ম ইয়াসিন নেওয়াজ বলেন, বন্য হাতি জোর করে সরিয়ে নেওয়া যায় না। তাই ওগুলো পাহারায় রাখতে হয়। ওগুলো স্বাভাবিকভাবে ফিরে যাবে। তাই যখন ফিরে যাবে, তখন যাতে আর না আসে, সে চেষ্টা করা হবে।

আজ সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হাতির তাণ্ডবের চিহ্ন। সব কটি ঘরের দরজা, দেয়াল আর আসবাবপত্র ভেঙে তছনছ করেছে হাতি।

বৈরাগ ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা ছকিনা আখতার বলেন, ‘গতকাল রাত আটটা থেকে আজ ভোররাত চারটা পর্যন্ত আমরা ছাদে ছিলাম। ওই সময় হাতির তাণ্ডব চোখে দেখেছি।’

জানতে চাইলে বৈরাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, এক মাস ধরে এলাকার লোকজনের ঘুম নেই। আজ এই বাড়ি তো কাল ওই বাড়িতে হানা দিচ্ছে হাতি। লোকজনের কষ্টের শেষ নেই।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘হাতির হানায় আটটি বসতবাড়ি ক্ষতি হওয়ার খবর শুনেছি।’