'পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে হাইকোর্ট মশা মারার জন্য রুল দেয় না'

মশা । ফাইল ছবি।
মশা । ফাইল ছবি।

ঢাকা সিটিতে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগ ছড়ানো বন্ধে এডিস মশাসহ মশকনিধনের কার্যক্রম জানিয়ে দুই সিটি করপোরেশনের দেওয়া প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হননি হাইকোর্ট। এ কার্যক্রমের বিষয়ে জানাতে দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।

এর আগে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে ১৪ জুলাই হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা এক সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা আকারে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মাধ্যমে বিবাদীদের জানাতে বলা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়রা ফায়রোজ দুই সিটি করপোরেশনের পদক্ষেপ মশকনিধন কার্যক্রম-সম্পর্কিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।

শুনানিকালে আইন কর্মকর্তার উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে হাইকোর্ট মশা মারার জন্য রুল দেয় না। এটা আমাদের দিতে হয়। খবরে এসেছে ২৬ জন মারা গেছেন। অথচ যখন রুল দেওয়া হয়েছিল, তখন ৬-৭ মারা গিয়েছিল। মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। মানে (আপনারা) কিছু করছেন না। প্রতিবেদনে যা-ই লেখেন না কেন, কনসিকোয়েন্স (পরিণতি) তো হাসপাতাল। একটি লোককে তো জোর করে হাসপাতালে পাঠাতে পারবেন না, পারবেন কী? সাংবাদিকেরা কি মিথ্যা লেখে?’

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের ভাষ্য, কর্তৃপক্ষের বিশেষত ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নিষ্ক্রিয়তায় ঢাকা শহরে প্রতিদিন শত শত মানুষ ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং এ ধরনের রোগে ভুগছেন। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও এ ধরনের রোগে সম্প্রতি অনেকে মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ সূত্রের পাশাপাশি অন্য দাপ্তরিক সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ায় প্রতিদিন শতাধিক মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

সাধারণত এপ্রিল থেকে জুনে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়। এ বছর মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। চলতি মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৫৪ জন আক্রান্ত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। এরপর ডেঙ্গুর প্রকোপ কমতে থাকে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর এপ্রিল থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩২২। এ বছর এপ্রিল থেকে গত ১৪ জুলাই পর্যন্ত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ২৪৭ জন।