'ছেলেধরা' অপবাদ দিয়ে টাকা দাবি, না পেয়ে পিটুনি

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় দুই যুবককে ‘ছেলেধরা’ অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ সোমবার থানায় একটি মামলা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার হবিরবাড়ী আমতলী এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে সে সময় তিনজনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেন জয়নাল (৪৫), সোহাগ (২৪) ও সুমন (২৪)। তাঁদের সবার বাড়ি ভালুকা উপজেলার আমতলী এলাকায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই তিনজনের একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের আমতলী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসেন শেখ ফরিদ (২৮) ও মঞ্জুরুল খান (২৪) নামের দুই যুবক। রোববার দুপুরে বোনের বাসার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাঁরা দুজন কথা বলছিলেন। এই সময় এলাকার সুজন (১৮) ও হৃদয় (১৯) নামের দুজন ওই দুই যুবকদের নাম-ঠিকানা জানতে চান। মঞ্জুরুল ওই দুজনকে জানান, তাঁরা বোনের বাসায় বেড়াতে এসেছেন। সঠিক তথ্য যাচাইয়ের জন্য দুজনকে বোনের বাসায় নিয়ে যান। তখন বোনসহ পাশের কক্ষের অন্য ভাড়াটিয়ারাও ফরিদ ও মঞ্জুরুলের বেড়াতে আসার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এরপরও সুজন ও হৃদয় ওই দুই যুবককে আবার রাস্তায় নিয়ে যান। সেখানে এলাকার আরও কয়েকজনকে মুঠোফোন ডেকে নেন। একপর্যায়ে ফরিদ ও মঞ্জুরুলকে ‘ছেলেধরা’ অপবাদ দিয়ে মারপিট শুরু করেন ও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের একজন মুঠোফোনে ভালুকা মডেল থানা-পুলিশকে জানান। পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই দুই যুবককে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। ঘটনায় জড়িত থাকায় জয়নাল, সোহাগ ও সুমনকে আটক করে। এ সময় অন্যরা পালিয়ে যান।

ঘটনার শিকার মঞ্জুরুল খান বলেন, সাতজনের নাম উল্লেখসহ ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আজ সকালে তিনি একটি মামলা করেছেন। ঘটনার সময় তাঁদের কাছে থেকে তিনটি মোবাইল ও নগদ ৩ হাজার ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল হক বলেন, মামলায় আটক তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।

ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনের একজন জানিয়েছেন, ওই যুবকদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছিল। মূল আসামি হৃদয় ও সুজনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।