মাদকে জড়িত আরও পুলিশের সন্ধানে কাউন্টার টেররিজম

মাদক ব্যবসায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের নাম জানতে চায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। এ জন্য ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার পুলিশের এক সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়েছে। তাঁর নাম বাবলু খন্দকার। তিনি বরখাস্ত হওয়া চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের টিএসআই। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম খায়রুল আমীন শুনানি শেষে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশের চাকরির আড়ালে বাবলু দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ও গাঁজা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কক্সবাজার থেকে সংগ্রহ করা ইয়াবা রেলে করে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাচার করতেন। আর চট্টগ্রামে নিয়ে আসতেন গাঁজা। গত ১৪ জুন  রাতে নগরের ডবলমুরিং থানার সিজিএস কলোনি এলাকায় গোপন তথে৵র ভিত্তিতে টিএসআই ছিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও র‍্যাব। ওই সময় তাঁর কাছ থেকে ইয়াবা বিক্রির ৮০ হাজার টাকা ও ১০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার টিএসআই বাবলু খন্দকারের কাছ থেকে ইয়াবাগুলো নিয়েছেন। এ ঘটনায় ছিদ্দিকুর, বাবলু ও অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করা হয় ডবলমুরিং থানায়। ঘটনার পর থেকে পলাতক হয়ে যান বাবলু। তিনি যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সীমান্ত ও বিমানবন্দর এলাকায় সতর্কতার জন্য পুলিশ সদর দপ্তরকে চিঠি দেওয়া হয়।

৩ জুলাই ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকায় স্ত্রী শিউলি বেগমসহ গ্রেপ্তার হন বাবলু। ওই সময় তাঁদের কাছে থাকা একটি কাঁঠালের ভেতর থেকে ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করে র‍্যাব। এ ঘটনায় গেন্ডারিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।

সূত্র জানায়, ধরা পড়ার পর বাবলুর নাম আলোচনায় আসে। অথচ গত বছরের শুরুতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মাদক চোরা কারবার ও সরবরাহে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়তাকারীদের একটি তালিকা করে। এতে চট্টগ্রাম নগর ও জেলা পুলিশের ৩৫ জনের নাম রয়েছে। তাঁদের কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

নগরের ডবলমুরিং থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার বাবলু খন্দকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতে গত রোববার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। এতে বলা হয়, ইয়াবা সরবরাহকারী অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে শনাক্ত, ইয়াবা ব্যবসায় পুলিশের আরও সদস্য জড়িত আছে কি না, এসব বিষয় বের করা আবশ্যক।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, বাবলু খন্দকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রিমান্ড মঞ্জুরের জোর দাবি জানানো হয়। অপর দিকে তাঁর আইনজীবী নির্দোষ দাবি করে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। আদালত তা নাকচ করে দেন।

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম ইউনিট চট্টগ্রামের উপপরিদর্শক (এসআই) রাছিব খান বলেন, রিমান্ডে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার সিদ্দিকুরের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই ও ইয়াবা পাচারে পুলিশের আরও কেউ জড়িত কি না, বাবলুর কাছ থেকে তা জানার চেষ্টা করা হবে। কয়েক দিনের মধে৵ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কারাগার থেকে আনা হবে।