তাসলিমা হত্যার প্রধান আসামি হৃদয় ৫ দিনের রিমান্ডে

তাসলিমা বেগম
তাসলিমা বেগম

এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ আদালতকে বলেছে, বাড্ডার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই তলা থেকে তাসলিমা বেগমের চুল ধরে টেনে আনে এক ব্যক্তি। পরে পাকা মেঝেতে তাসলিমার মাথা আছাড় দেয় কয়েকজন। এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি ইব্রাহীম ওরফে হৃদয় ইসলাম মোল্লাও (২০) কীভাবে তাসলিমাকে পিটিয়েছিল তা দেখেছিল ওই কিশোর।

তাসলিমা হত্যাকাণ্ডে ওই কিশোর নিজেও জড়িত। গতকাল মঙ্গলবার ওই কিশোরকে টঙ্গীর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। এদিকে বুধবার তাসলিমাকে পিটিয়ে হত্যার মামলার প্রধান আসামি ইব্রাহীম ওরফে হৃদয় ইসলাম মোল্লার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। হৃদয় ইসলামকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভূলতা এলাকা থেকে গতকাল মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করে

বাড্ডা থানা-পুলিশ আদালতকে প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাসলিমা হত্যাকাণ্ডে এক কিশোর জড়িত আছে। তার বয়স ১৪ বছর। ওই কিশোর বাড্ডা এলাকার একটি মুরগির দোকানে কাজ করে। সেদিন সকাল সাড়ে ৮ টায় সে দোকানে আসে। দোকানের সামনে বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চিল্লাপাল্লা শুনতে পায়। লোকজন ছেলে ধরা বলে চিৎকার করতে থাকে। পরে সে স্কুলে যায়। লোকজন স্কুলের তালা ভেঙে স্কুলের দোতলায় যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে একজন ওই নারীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামায়। অনেকে কিলঘুষি মারতে থাকে। কেউ কেউ চুল ধরে মাথা পাকা ফ্লোরে আছাড় মারে। তার দোকানের পাশের মালিকের ছেলে জাফর ওই নারীকে পেটাতে থাকে। পরে জাফরের হাত থেকে লাঠি নিয়ে ওই নারীর শরীরে পা দিয়ে মাথায় বাড়ি মারতে থাকে শাক বিক্রেতা হৃদয়। আরও একজন গাছের ডাল দিয়ে ওই নারীকে পেটায়। ওই কিশোরও মাটিতে পড়ে থাকা তাসলিমাকে পা দিয়ে একটি আঘাত করে।

গত শনিবার সকালে বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন তাসলিমা বেগম। তাঁর দুই সন্তানের ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে স্কুলের গেটে কয়েকজন নারী তাসলিমার নাম-পরিচয় জানতে চান। পরে লোকজন তাসলিমাকে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে নেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বাহির থেকে কয়েকশ লোক তাসলিমাকে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষ থেকে বের করে নিয়ে আসে। স্কুলের ফাঁকা জায়গায় প্রধান আসামি হৃদয়ের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা তাসলিমাকে পিটিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় তাসলিমার বোনের ছেলে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচ শ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

তাসলিমা বেগমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। তাঁর নাম জাফর (১৮)। ওই কিশোর ছাড়া গ্রেপ্তার অপর আসামিরা হলেন, আবুল কালাম আজাদ (৫০), কামাল হোসেন (৪০), শাহিন (৩১), বাচ্চু মিয়া (২৮) ও বাপ্পি (২১)।