গুজব ও ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন: পিএমও

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ছবি: বাসস
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ছবি: বাসস

গুজব ছড়ানো ঠেকাতে এবং ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে সমাজের সব শ্রেণি–পেশার মানুষকে একত্র করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও)।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আজ বুধবার বিকেলে তাঁর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরকে নিয়ে অনুষ্ঠিত এ–সংক্রান্ত সমন্বয় সভা হয়। সেখানে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার পাশাপাশি দেশব্যাপী চলমান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক দৃষ্টি রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়ে যাচ্ছেন।

সমন্বয় সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। ওই সভায় গুজব, ডেঙ্গু এবং বন্যা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, দপ্তর, বিভাগ ও সিটি করপোরেশনগুলো এ সম্পর্কে নিজস্ব পরিকল্পনা-প্রস্তুতি এবং পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে।

পিএমও এ সময় ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে তাদের মশকনিধন অভিযানকে জোরদার করার আহ্বান জানায়। সেই সঙ্গে হাসপাতালগুলোয় ভর্তি ডেঙ্গুরোগীর প্রতি বিশেষ নজর প্রদানে প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষ মেডিকেল টিম গঠনের নির্দেশনা দেয়। বৈঠকে বৃহস্পতিবার থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ‘সচেতনতা সপ্তাহ’ পালনের সিদ্ধান্ত হয়। যার মধ্যে রয়েছে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং এবং গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো।

পিএমও সকল সরকারি দপ্তরগুলোকে নিজস্ব অফিস এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধের আহ্বান জানায়। জনগণের বাড়িঘর এবং আশপাশের এলাকা বিশেষকরে কোনো পাত্রে বা ফুলের টবে জমে থাকা পানি, এয়ার কন্ডিশনার এবং রেফ্রিজারেটর থেকে নির্গত স্বচ্ছ পানি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ওই স্থান শুষ্ক রাখার জন্যও সভায় আহ্বান জানানো হয়।

পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মানুষের মাথার প্রয়োজন বলে সারা দেশে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ছড়ানো গুজব সম্পর্কে বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি গুজব ছড়ানো ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এর সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রামপ্রধান), শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ত করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

জনগণকে এ সময় যেকোনো ধরনের গুজব সম্পর্কে সজাগ করে তুলতে গণমাধ্যম বিশেষ করে টিভি চ্যানেলগুলোকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়। দেশের চলমান বন্যা সম্পর্কে বৈঠকে প্রকৃত দুর্গতদের মাঝে যথাসময়ে বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী, যেমন: চাল, বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো এবং রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বন্যাদুর্গত এলাকায় যাতে রোগ-জীবাণু না ছড়িয়ে পড়তে পারে, সে জন্য জন্য মেডিকেল টিম গঠন এবং বন্যার পানি নেমে গেলে দ্রুত পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়। বন্যাদুর্গত এলাকায় এ সময় পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৈঠককে অবহিত করা হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্বে করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিআইডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন।