কাঞ্চনের ভোটে 'বোতাম বুঝতে দেরি হচ্ছে'

‘মার্কার পাশে সাদা বোতাম চাপেন, এরপর সবুজ বোতাম চাপেন—এভাবেই নির্দেশনা দিচ্ছেন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. ছামাদ মিয়া! পাশে টিসু পেপারে ছবি একে ভোটারদের বুঝিয়ে দিচ্ছেন পোলিং কর্মকর্তার। তাঁরা বলেন, বুঝতে সময় লাগায় ভোট নিতে একটু দেরি হচ্ছে।

এটি নারায়ণগঞ্জের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দুয়া এলাকায় সলিমউদ্দিন চৌধুরী কলেজ কেন্দ্রের চিত্র। বাইরে ভোটারের লম্বা সারি। তিনটি ওয়ার্ডের চারটি কেন্দ্র ঘুরে এমনি দেখা গেছে, প্রথম তিন ঘণ্টায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২৮ শতাংশের বেশি। উপস্থিতি ব্যাপক হলেও ধীরে চলছে ভোট গ্রহণ। অনেকের ফিংগার প্রিন্ট মিলছে না। তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এবারই প্রথম কাঞ্চন পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হচ্ছে।

সলিমউদ্দিন চৌধুরী কলেজে ভোটার ১ হাজার ৭০৭, ভোট পড়েছে ৫৬৩টি। ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাঞ্চন ভারত উচ্চবিদ্যালয়ের পুরুষ কেন্দ্রে ভোটার ২ হাজার ৬৮৪, ভোট পড়েছে ৮৫৭টি। একই বিদ্যালয়ে মহিলা কেন্দ্রে ভোটার ২ হাজার ৫৭৪, ভোট পড়েছে ৬৭০টি। আর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাটাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার ২ হাজার ৭৫১, ভোট পড়েছে ৬৫৩টি।

কাঞ্চন ভারত বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, অনেকে ভুল ভোটার স্লিপ নিয়ে আসছেন, বোতাম বুঝতে দেরি হচ্ছে। তাই একটু সময় লাগছে, সবাইকে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্য কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারাও তাই বলেছেন প্রথম আলোর কাছে।

প্রতিটি কেন্দ্রে শত শত মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রচণ্ড গরমে ঘামছিলেন সবাই। বেলা সোয়া ১১টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে দেখা দেয় নতুন ভোগান্তি। হাটাব বিদ্যালয় কেন্দ্রে সব ভোটার ভোটকক্ষে ঢুকে পড়ায় ভোট নেওয়া জটিল হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ, বিজিবি মিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের সরব উপস্থিতি ও উৎসবের আমেজ দেখা গেছে। সব কেন্দ্রের ভেতরে–বাইরে নৌকার সমর্থকের ব্যাপক উপস্থিতি চোখে পড়েছে। অন্তত দুটি কেন্দ্রে পুলিশ সাংবাদিকদের বাধা দিয়েছে। তারা বলে, এত সাংবাদিক কোনো নির্বাচনে দেখেনি।

৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার মো. নুরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানুষ ছিল আতঙ্কে, আশার চেয়ে ভালো ভোট হইতাছে। কোনো মারামারি নাই। কয়েক বছরের মধ্যে এমন ভোট হয় নাই এখানে।’

কাঞ্চন পৌরসভায় মেয়র পদে মোট প্রার্থী চারজন। তাঁদের মধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন পৌর যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র ও কাঞ্চন পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান আবুল বাশার, পৌরসভার প্রথম মেয়র ও পৌর বিএনপির সহসভাপতি মজিবর রহমান ও জেলা যুবদলের সহসভাপতি আমিরুল ইসলাম।