কুষ্টিয়ায় গৃহপরিচারিকা হত্যায় গৃহকর্তাসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ায় গৃহপরিচারিকা হত্যার দায়ে গৃহকর্তাসহ তিনজনের যাবজ্জীবন। ছবি: প্রথম আলো
কুষ্টিয়ায় গৃহপরিচারিকা হত্যার দায়ে গৃহকর্তাসহ তিনজনের যাবজ্জীবন। ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় রেখা খাতুন (৩৮) নামের এক গৃহপরিচারিকাকে হত্যার দায়ে গৃহকর্তাসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়ার দায়রা জজ অরূপ কুমার গোস্বামী এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ভেড়ামারা উপজেলার মইশডরা গ্রামের হাসেম সরদার (৪৮), দৌলতপুর উপজেলার শিতলীপাড়া গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেন ওরফে মুফাজ (৫০) ও আকরামুল হক ওরফে আকেম (৪৮)। মোফাজ্জেল ও আকরামুল দুই ভাই। মোফাজ্জেল হোসেনের বাড়িতে গৃহপরিচারিকা ছিলেন রেখা খাতুন।

রায় ঘোষণার সময় তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ পাহারায় তাঁদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা যায়, শিলতীপাড়া গ্রামের রুস্তম আলীর স্ত্রী রেখা খাতুন বাড়ির পাশে মোফাজ্জেল হোসেনের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। ২০১৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর রেখাকে আর খুঁজে পায়নি তাঁর পরিবার। পরের দিন সকালে গ্রামের সরিষাখেতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। ওই দিনই রুস্তম আলী বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

দৌলতপুর থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল আলম মামলাটি আংশিক তদন্ত করেন। অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) এস এম জাহিদ বিন আলমের কাছে যায়। শেষ পর্যন্ত মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) যায়। ২০১৫ সালের ১৯ মে সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক আকিদুল ইসলাম তদন্ত করে আসামি হাসেম সরদার, মোফাজ্জেল হোসেন ও আকরামুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

বাদী রুস্তম আলীর ভাষ্য ছিল, রেখা খাতুন মোফাজ্জেলের বাড়িতে কাজ করতেন। মোফাজ্জেলের মেয়ের সঙ্গে গ্রামের এক ছেলের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের ঘটনা রেখা দেখেছিলেন। বিষয়টি যাতে জানাজানি না হয়, তার জের ধরেই রেখাকে হত্যা করা হয়েছিল।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অনুপ কুমার নন্দী বলেন, তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আসামিদের হাজতবাসের সময় কারাদণ্ডের মেয়াদ থেকে বাদ দিতে বলা হয়েছে।

আসামিদের পক্ষে আইনজীবী তানজিলুর রহমান এনাম বলেন, আসামিদের সঙ্গে আলোচনা করে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।