নুসরাত হত্যায় বোরকা জব্দ করেছিল পিবিআই

নুসরাত জাহান রাফি। ফাইল ছবি।
নুসরাত জাহান রাফি। ফাইল ছবি।

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি শাহাদাত হোসেন শামীমের ব্যবহৃত বোরকাটি জব্দ করেছিল পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। আজ বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে মো. শাহজাহান নামে এক হোটেল ব্যবসায়ীর জবানবন্দিতে এ কথা জানা গেছে।

মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমি হোটেলের ব্যবসা করি। গত ৪ মে দুপুরে পিবিআইয়ের (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) সদস্যরা সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার পেছনে আমার বাসায় যায়। পিবিআই আমাকে ডাকে। আমি মাদ্রাসার পুকুরে নামি। আমার সঙ্গে আরও দুজন নামে। একজন কলা ব্যাপারী, একজন পিবিআই সদস্য। আমি পানিতে খুঁজে একটি বোরকা পাই। পিবিআইয়ের সঙ্গে আসামি শাহাদাত হোসেন শামীমও ছিল। পিবিআই বোরকাটি জব্দ করে। শাহাদাত হোসেন শামীম নিজেকে লুকানোর জন্য এই বোরকা ব্যবহার করেছিল।’

আজ মো. শাহজাহান ছাড়াও এ মামলায় সাক্ষ্য দেন বোরকা উদ্ধারের সাক্ষী সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আবুল কাশেম, মো. সেলিনুর রেজা ও এমদাদ হোসেন পিংকেল।

এমদাদ হোসেন আদালতে বলেন, ‘৮ এপ্রিল আসামি শাহাদাত হোসেন শামীমের মেজ ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, “শামীম তোর সঙ্গে একটু দেখা করবে।” এরপর শামীম ফোন করলে তাঁকে ঠিকানা দিই। শামীম আমাকে অপ্পো কোম্পানির একটি ফোন সেট দিয়ে সেটি তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলেন। গত ২৯ এপ্রিল ওই ফোন সেটটি পিবিআইকে হস্তান্তর করি। এ ফোন সেটটি নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনার সময় শামীম ব্যবহার করেছিল।’

এ নিয়ে ৯২ জনের মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫১ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়েছে। আগামী রোববার আদালতে আরও সাতজনের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে। তাঁরা হলেন মোশারফ হোসেন ও মো. গোলাম মাওলা (জব্দের সাক্ষী), ফেনী কারাগারের জেল সুপার মো. রফিকুল কাদের, ডেপুটি জেলার মনির হোসেন, কারারক্ষী মো. শাহ নেওয়াজ, মো. রিপন ও ছবি রঞ্জন ত্রিপুরা।

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের (সাইক্লোন শেল্টার) ছাদে নিয়ে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর দেশলাই দিয়ে আগুন লাগিয়ে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। অগ্নিদগ্ধ নুসরাত ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।