প্রিয় সাহার বক্তব্য হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নয়: রানা দাশগুপ্ত

রানা দাশগুপ্ত। ফাইল ছবি
রানা দাশগুপ্ত। ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে দেওয়া প্রিয় সাহার বক্তব্য বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নয়। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এ কথা বলেন।

প্রিয় সাহা সম্প্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান উধাও হয়ে গেছেন। তাঁর এমন বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

প্রিয় সাহা বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তাঁকে ইতিমধ্যে সংগঠন থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান রানা দাশগুপ্ত।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘প্রিয় সাহা সংগঠনের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন, এটি সত্যি। তবে সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত বা দায়িত্ব নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাননি বা মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। যা করেছেন, নিজ দায়িত্বে করেছেন। এর সঙ্গে সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই।’

রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমন্ত্রিত হয়ে সংগঠনের তিন সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যায়। এঁদের মধ্যে ছিলেন উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অশোক বড়ুয়া, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্মল রোজারিও ও প্রিয় সাহা। প্রিয় সাহা ছাড়া বাকি দুজন ২১ জুলাই দেশে ফিরে আসেন।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, প্রিয় সাহা ‘ডিজএপিয়ার’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তিনিই ভালো বলতে পারবেন। এটি যদি স্বাধীন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের গুম বা নিখোঁজ অর্থে বলে থাকেন, তবে তা অসত্য। তাঁরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, প্রিয় সাহার বক্তব্য নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চলছে। ব্যক্তির বক্তব্যকে পুঁজি করে সম্প্রদায় বিশেষকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে। এটা দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক।

সংবাদ সম্মেলনে রানা দাশগুপ্ত বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার অতীতের তুলনায় এখন কিছুটা কম। তবে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার অব্যাহত আছে।

পাকিস্তান আমল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত সরকারি তথ্য-উপাত্ত দেখিয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, দেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমছে।

রানা দাশগুপ্ত দাবি করেন, অতীতে হিন্দু জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমলেও গত এক দশকে আওয়ামী লীগের শাসনামলে হিন্দু জনগোষ্ঠী ৮ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থে সংখ্যালঘুর সমস্যা পাশ না কাটিয়ে তা ইতিবাচকভাবে মোকাবিলা করা উচিত। প্রিয় সাহার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ঘোলা পানিতে যাতে কেউ মাছ শিকার না করতে পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘প্রিয় সাহা নিজের বাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় গিয়েছিলেন বিচার চাইতে। কিন্তু তিনি বিচার পাননি।’

রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, ‘প্রিয় সাহার সঙ্গে সংগঠনের কোনো যোগাযোগ নেই। এ ঘটনার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। তিনি কবে দেশে ফিরবেন, সেটিও আমরা জানি না।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য নিমচন্দ্র ভৌমিক, কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর, নির্মল রোজারিও প্রমুখ।