লঞ্চমালিকদের নৌ ধর্মঘট প্রত্যাহার

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নৌযানশ্রমিকদের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে লঞ্চমালিকদের ডাকা নৌযান ধর্মঘট প্রায় ৪৫ ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিয়েছেন মালিকেরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত লঞ্চ মালিক সমিতির বৈঠকে হজযাত্রী, বন্যা, ঈদ ও মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে লঞ্চমালিকেরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, নৌযানশ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় মৃত নৌশ্রমিকদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান, বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ ১১ দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন নৌযানশ্রমিকেরা। এতে সারা দেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু লঞ্চ মালিক সমিতি তখন ধর্মঘটের ডাক দেয়।

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহআলম বলেন, ‘নৌপ্রতিমন্ত্রী, সংসদীয় চিফ হুইপ, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের আহ্বানে এবং দাবিদাওয়া পূরণের আশ্বাসে আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিই। নৌযান ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণার পর নৌযানশ্রমিকেরা কাজে যোগদান করতে গেলে লঞ্চমালিকেরা লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেন।’

ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে পারাবত লঞ্চের মালিক শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, স্বার্থান্বেষী কিছু শ্রমিক অযৌক্তিক দাবি করে কিছুদিন পরপরই লঞ্চ ধর্মঘটসহ লঞ্চে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে আসছে। চুক্তি ভঙ্গ করে যেসব শ্রমিক যাত্রী ও মালিকদের জিম্মি করে আন্দোলন করছেন। এসব অবৈধ শ্রমিকনেতাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান ও সুন্দরবন লঞ্চের মালিক সাইদুর রহমান বলেন, নৌযানশ্রমিকদের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে মালিকেরা লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও পণ্যবাহী নৌযানের মালিকদের সভায় হজযাত্রী, বন্যা, ঈদ ও মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও পণ্যবাহী লঞ্চের মালিকেরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, লঞ্চ চালনার ঘোষণার পরপরই অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে লঞ্চ চালনার প্রস্তুতি নেন শ্রমিকেরা। বিকেল তিনটার পর থেকে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল যাত্রীবাহী লঞ্চ নিজ নিজ গন্তব্যে ছেড়ে গেছে।

নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, লঞ্চমালিকদের ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে ঢাকা নদীবন্দর থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।