সাড়ে ৭ লাখ টাকায় বিক্রি হবে ষাঁড়

খামারে বিক্রির জন্য রাখা রাখা। সম্প্রতি কেরানীগঞ্জে এলাকায়।  ছবি: আশরাফুল আলম
খামারে বিক্রির জন্য রাখা রাখা। সম্প্রতি কেরানীগঞ্জে এলাকায়। ছবি: আশরাফুল আলম

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকার কেরানীগঞ্জের খামারগুলোতে মোটাতাজা করা হয়েছে কমবেশি ৭ হাজার দেশি–বিদেশি জাতের গরু। পালন করা হচ্ছে বিপুলসংখ্যক ছাগলও। খামারিদের দাবি, গবাদিপশুকে তাঁরা প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ান। মোটাতাজা করতে ইনজেকশন কিংবা ক্ষতিকর কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করেন না তাঁরা। খামারে দেশি একটি ষাঁড় আছে, যার ওজন ১ হাজার ২২০ কেজি। সাড়ে সাত লাখ টাকা দাম পেলে  ষাঁড়টি  বিক্রি করা হবে। 

কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, তাদের তালিকাভুক্ত ৫৮০টিসহ প্রায় ৭০০ খামারে গরু মোটাতাজা করা হয়। এর মধ্যে সুলতান অ্যাগ্রোভেট ১৮৫টি, আলম অ্যাগ্রোভেট ১৪৫টি, আপন ডেইরি ফার্ম ১৩০টি, এসআর অ্যাগ্রোভেট ১২৫টি, ফিট অ্যান্ড ফ্রেশ অ্যাগ্রোভেট ১২০টি, শরীফ অ্যাগ্রোভেট ৮০টি, সাফায়েত ডেইরি ফার্ম ৭৫টি, মক্কা–মদিনা অ্যাগ্রোভেট ২৪টি গরু মোটাতাজা করেছে।

সম্প্রতি উপজেলার আটি মনোহরিয়া এলাকার সাফায়েত ডেইরি ফার্ম ও রোহিতপুর পোড়াহাটি এলাকার ফিট অ্যান্ড ফ্রেশ ডেইরি ফার্মে গিয়ে দেখা যায়, খামারের কর্মচারীরা গবাদিপশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ পানি দিয়ে পশুর গা ধুয়ে দিচ্ছেন, কেউবা গায়ে তেল মেখে দিচ্ছেন। সাফায়েত ডেইরি ফার্মের মালিক আবু সিদ্দিক নিজেই গবাদিপশুর পরিচর্যা করছেন।

ফিট অ্যান্ড ফ্রেশ ডেইরি ফার্মের তত্ত্বাবধায়ক মতিউর রহমান বলেন, তাঁরা প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে ১২০টি গরুমোটাতাজা করেছেন। কোনো ধরনের ইনজেকশন বা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করছেন না তাঁরা। তিনি জানান, পশু খাদ্যের জন্য তাঁরা ঘাস চাষ করেন। পশুগুলোকে সকাল-বিকেল সবুজ ঘাস খেতে দেওয়া হয়। তিনি জানান, তাঁর খামারে দেশি একটি ষাঁড় আছে, যার ওজন ১ হাজার ২২০ কেজি। সাড়ে সাত লাখ টাকা দাম পেলে তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করবেন। ইতিমধ্যে দাম সাত লাখ টাকা উঠেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৬৫ কেজি ও ১ হাজার ১২০ কেজি ওজনের দুটি ষাঁড় আছে তাঁদের। তাঁদের খামারে গরুর সর্বনিম্ন দাম আড়াই লাখ টাকা। এ ছাড়া তাঁরা উন্নত জাতের দেশি–বিদেশি জাতের ছাগলও পালন করেছেন।

ফিট অ্যান্ড ফ্রেশ ডেইরি ফার্মের মালিক আকবর আলম বলেন, শখের বশে ২০১৪ সালে একটি গাভি কিনে ছোট একটি ছাপরাঘর তুলে তিনি লালন–পালন শুরু করেন। বর্তমানে তাঁর খামারে উন্নত জাতের ৪০০ গরু এবং দেশি–বিদেশি জাতের অর্ধশতাধিক ছাগল রয়েছে। এ বছর প্রথম কোরবানি উপলক্ষে ১২০টি ষাঁড় মোটাতাজা করেছেন। এ ছাড়া পালন করছেন ৫৫টি উন্নত জাতের ছাগল। তিনি জানান, আগামী বছর থেকে আরও বড় পরিসরে পশু মোটাতাজাকরণের কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।

সাফায়েত ডেইরি ফার্মের মালিক আবু সিদ্দিক বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ বছর ধরে তিনি গরু মোটাতাজা করছেন। এ বছর তিনি ৭৫টি দেশি ষাঁড় মোটাতাজা করেছেন। এর মধ্যে ৪৫টি গরু বিক্রি হয়ে গেছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. জহিরউদ্দিন বলেন, তাঁদের তালিকাভুক্ত ৫৮০টি খামারে ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রায় পাঁচ হাজার গবাদিপশু মোটাতাজা করা হয়েছে। ২৩ জন পশু চিকিৎসক ও প্রাণী সহকারী কর্মকর্তা এসব খামার তদারকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বলেন, কোনো খামারি যাতে পশুকে কোনো ধরনের ইনজেকশন দিতে না পারেন, সে জন্য প্রতিটি খামার তাঁদের নজরদারির মধ্যে রয়েছে।