কুষ্টিয়ায় এক দিনে ১০ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি

কুষ্টিয়ায় এক দিনে ১০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর হাসপাতালে ভর্তির খবর পাওয়া গেছে। কেবল কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালেই গতকাল শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে সরকারি হিসেবে কুষ্টিয়ায় গত ২০ দিনে ২৭ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হলো।

গতকাল ভর্তি হওয়া ১০ জনের মধ্যে ৬ জন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি চারজন চিকিৎসা শেষে ফিরে গেছেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক আগেও প্রতিদিন এক থেকে দুজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছিল। তবে গত তিন দিন থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তিন দিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ৫-৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে।

জানতে চাইলে শনিবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোছা. নূরুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, প্রচারণার কারণে রোগীরা এখন হাসপাতালে আসছে। কেবল শুক্রবারেই ১০ জন ডেঙ্গু রোগীকে শনাক্ত করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোগীদের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হচ্ছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্র বলছে, গত ৭ জুলাই কুষ্টিয়ায় প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়। সদর উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেন (২১) নামে এক যুবক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এরপর ১১ জুলাই থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আরও ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। যে ছয়জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি, তাঁদের অবস্থা তেমন আশঙ্কাজনক নয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এএসএম মুসা কবির প্রথম আলোকে বলেন, ধারণা করা হচ্ছিল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে যাবে। কিন্তু প্রতিদিনই জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ডেঙ্গু আক্রান্তদের শনাক্ত করা হচ্ছে। গত তিন দিনে শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবার আগে দরকার পৌরসভার উদ্যোগ। জরুরি ভিত্তিতে মশা নিধনে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর দাবি, মশা নিয়ন্ত্রণে পৌরসভা কাজ করছে। নিয়মিত ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। যদিও পৌরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মশার ওষুধ নিয়মিতভাবে ছিটানো হচ্ছে না। পৌরসভা নয়, বরং মশা নিয়ন্ত্রণে মানুষকেই আগে সচেতন হতে হবে বলেও মনে করছেন আনোয়ার আলী।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জেলায় এডিস মশা বেড়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যেন না বাড়ে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। এডিস মশার বংশবৃদ্ধি যেন না হয় সে ব্যাপারে প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে।