'ছেলে আমার ব্যাংকার হতে চেয়েছিল'

ছেলে ফিরোজের মৃত্যুসংবাদ শোনার পর থেকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা আলেয়া বেগম। মহেষপুর, ঠাকুরগাঁও, ২৭ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো
ছেলে ফিরোজের মৃত্যুসংবাদ শোনার পর থেকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা আলেয়া বেগম। মহেষপুর, ঠাকুরগাঁও, ২৭ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

পড়তেন ফিন্যান্স বিভাগে। তাই স্বপ্নটাও হয়তো সেভাবেই সাজিয়েছিলেন। হতে চেয়েছিলেন ব্যাংকার। তবে ফিরোজের জীবন প্রদীপের সঙ্গে সঙ্গে নিভে গেল সব স্বপ্ন।

ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলার মহেষপুর মুন্সিপাড়ায় ছেলে ফিরোজ কবির ওরফে স্বাধীন। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার মারা গেছেন তিনি। শনিবার তাঁর গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, গভীর শোক ছায়া নেমে এসেছে সারা বাড়িতে।

চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট ফিরোজ। তিনি ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগে ভর্তি হন। লেখাপড়া শেষে তিনি এখন মাস্টার্স পরীক্ষার ফলের অপেক্ষায় ছিলেন।

সরেজমিনে শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে দেখা যায়, আত্মীয়স্বজন ছুটে আসছেন ফিরোজের গ্রামের বাড়িতে। তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। ভিড় করছেন প্রতিবেশীরাও।

বাবা দবিরুল ইসলাম বলেন, লেখাপড়া শেষে ছেলে ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন দেখত। সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে ডেঙ্গু সেই স্বপ্ন শেষ করে দিল।

ছেলের মৃত্যুসংবাদ শোনার পর থেকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা আলেয়া বেগম। স্বজনদের কোনো সান্ত্বনাই তাঁর কান্না থামাতে পারছে না।

সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু জ্বরে এভাবে একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যু হবে, এটা মেনে নিতে পারছি না।’

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই ফিরোজ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে স্বজনরা তাঁকে ঠাকুরগাঁওয়ের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে আবারও ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ও পরে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করেন। শুক্রবার রাতে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।